সোনার প্যান্ট পড়ে দেশে ফিরলেন এক দুবাই প্রবাসী! এমন শিরোনাম দেখে চোখ কপালে উঠলেও ঘটনা বাস্তব! তবে উদ্দেশ্য ভিন্ন হওয়ার কারণে উক্ত প্রবাসীকে গ্রেফতার করেছে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউস প্রিভেন্টিভ টিম। গত ১৯ মে বিকাল ৫টার দিকে এয়ার আরাবিয়ার একটি ফ্লাইটের মাধ্যমে শারজাহ থেকে ঢাকায় ফিরেন ওমর ফারুক নামে এক যাত্রী।
গ্রিন চ্যানেল অতিক্রমকালে ওমর ফারুকের লাগেজ স্ক্যান করে তাকে আর্চওয়ে করানো হয়। স্ক্যানিংয়ে তার লাগেজের ভেতর স্বর্ণ ধরা পড়ে। পরে তার প্যান্টের পকেট থেকে স্বর্ণ উদ্ধার ছাড়াও কাস্টম ব্যাগেজ কাউন্টারের লাগেজ খুলে ৮টি স্বর্ণবার ও তার পরিহিত প্যান্ট থেকে ২টি স্বর্ণবার এবং ৯৮ গ্রাম স্বর্ণালংকার পাওয়া যায়।
উদ্ধারকৃত স্বর্ণের আনুমানিক ওজন ১.২৫৮ কেজি। যার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ৯৩ লাখ টাকা। স্বর্ণ ও যাত্রীর বিষয়ে ফৌজদারি মামলাসহ কাস্টম আইনে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
দেশে ফেরার সময় বিদেশ থেকে অনেকে সোনা নিয়ে আসেন। কেউ সোনার বার আনেন কেউ আনেন স্বর্ণালংকার। সোনা বহনকারীদের অধিকাংশই বিক্রির জন্য এসব নিয়ে আসেন। অতিরিক্ত পরিমাণে আনার কারণে সেগুলো জব্দ করা হয় বিমানবন্দরেই। অনেকক্ষেত্রে আটক করা হয় যাত্রীকে। মামলা দিয়ে পাঠানো হয় জেলে।
বাংলাদেশের প্যাসেঞ্জার ব্যাগেজ রুলস-২০১৬ অনুযায়ী, একজন যাত্রী সর্বোচ্চ ২৩৪ গ্রাম ওজন সমপরিমাণ স্বর্ণের বার আনতে পারেন। তবে এজন্য তাকে বিমানবন্দরে নেমেই কাস্টমসের নির্ধারিত ফরম পূরণ করে স্বর্ণের বিষয়টি জানাতে হবে এবং শুল্ক-কর পরিশোধ করতে হবে।
বার আনার ক্ষেত্রে প্রতি ১১.৬৭ গ্রামের জন্য ২০০০ টাকা করে শুল্ক পরিশোধ করতে হবে। তবে কেউ ২৩৪ গ্রাম ওজনের বেশি আনলে কাস্টমস সোনা এবং বহনকারীকে আটক করবে।
এছাড়াও কেউ যদি ঘোষণা না দিয়ে সোনা নিয়ে গ্রিন চ্যানেল অতিক্রম করতে থাকে তাহলে সেটা চোরাচালান হিসেবে গণ্য হবে। সেসময় তাকে শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগে শুল্ক এবং শুল্কের দিগুণ পরিমাণ জরিমানা করা হবে। এ ক্ষেত্রে মামলার দীর্ঘসূত্রিতায় সোনার বার পেতে অনেক সময় লাগতে পারে। তবে ঘোষণা দিয়ে নির্ধারিত শুল্ককরাদি পরিশোধ করলে খুব সহজেই বহনকরা স্বর্ণবারটি নিয়ে যেতে পারবেন যাত্রীরা।
এছাড়াও কোনো ধরনের শুল্ক কর না দিয়েই (শুল্কমুক্ত সুবিধা) একজন যাত্রী সর্বোচ্চ ১০০ গ্রাম স্বর্ণালংকার আনতে পারবেন। তবে কোনো অলংকারের সংখ্যা ১২টির বেশি হবে না। কেউ যদি ১০০ গ্রামের বেশি স্বর্ণালংকার আনেন সেক্ষেত্রে তাকে অতিরিক্ত প্রতি গ্রাম এর জন্য প্রায় ২০০০ টাকা শুল্ক পরিশোধ করতে হবে।
তবে স্বর্ণালংকারের পরিমাণ অস্বাভাবিক বা বাণিজ্যিক বলে মনে হলে কাস্টমস তা আটক করবে। আটক হওয়া স্বর্ণালংকার পরবর্তী সময়ে শুল্ক-করাদি এবং জরিমানা পরিশোধ করে ফেরত দেওয়া হয়। তবে স্বর্ণালংকারের পরিমাণ যদি ‘চোরাচালান’ বলে মনে হয় সেক্ষেত্রে কাস্টমস সেগুলো আটক করে বাহকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করবে।
আরো পড়ুন:
সবাই আমার স্ত্রীকে চোরের বউ বলে আমাকে জামিন দেন
পাসপোর্ট অফিসে কোটি টাকার ঘুষ বাণিজ্য, অনুসন্ধানে দুদক
প্রবাসী বন্ডে কমছে মুনাফার হার
করোনা মোকাবিলায় ওমানের চেয়েও এগিয়ে বাংলাদেশ
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post