দেশের শিল্প-কারখানা, বিদ্যুৎকেন্দ্র, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং আবাসিকের জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয় প্রাকৃতিক গ্যাস। গ্যাস ছাড়া এসব প্রতিষ্ঠান পুরোপুরিভাবে অচল বললেই চলে। এক হিসেবে বলা চলে, গ্যাসের ওপর ভর করেই দাড়িয়ে আছে দেশের অর্থনীতি। গ্যাস নিয়ে কথা বললেই বেশকিছু প্রশ্ন আমাদের সামনে চলে আসে। আর তা হলো- আমরা যে গ্যাস ব্যবহার করি তার পুরোটাই কি দেশ থেকে উত্তোলন করা হয়? নাকি দেশের বাইরে থেকে আমদানি করা হয়। আমদানি করলে তা কোন দেশ থেকে এবং সেটি কী পরিমাণ?
শুরুতেই কিছু তথ্য দিয়ে রাখি, আমাদের দেশে যে পরিমাণ গ্যাসের চাহিদা তার ৮০ শতাংশ মেটানো হয় দেশীয় খনি থেকে। বাকী ২০ শতাংশ পূরণ করা হয় আমদানি করে। আমদানি করা গ্যাসকে বলছি তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস বা এলএনজি। দুটি দেশ থেকে এই এলএনজি আমদানি করা হয়। তার একটি হলো কাতার অন্যটি ওমান। প্রশ্ন হলো- যে পরিমাণ গ্যাস আমদানি করা হয় দেশে তার গুরুত্ব কতটুকু।
আগেই বলে রাখছি.. কাতার ও ওমান থেকে যে গ্যাস আমদানি করা হয় তার গুরুত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। কারণ দেশের মোট গ্যাস সরবরাহের ৫ শতাংশ আমদানি করা হয় স্পট মার্কেট বা খোলা বাজার থেকে। মূল্যবৃদ্ধির কারণে এই পরিমাণ গ্যাসে ঘাটতি তৈরি হলেই হিমশিম খেতে হয় জ্বালানি বিভাগ ও পেট্রোবাংলাকে। এমনকি রাজধানীসহ দেশের গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। তাহলে বুঝতেই পারছেন ২০ শতাংশ গ্যাস কতোটা গুরুত্বপূর্ন!
রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে কাতার ও ওমান থেকে ২০ শতাংশ গ্যাস আমদানি করা হয়। এর ১২ শতাংশ আসে কাতার থেকে বাকী ৮ শতাংশ আসে ওমান থেকে।ওমানের সঙ্গে ১০ বছর মেয়াদী চুক্তি এই গ্যাস চুক্তি রয়েছে। আগামী ২০২৮ সাল পর্যন্ত এই গ্যাস বাংলাদেশে রফতানি করবে দেশটি। দেশে এলএনজি তদারকির দায়িত্বের রয়েছে রাষ্ট্রয়াত্ত্ব কোম্পানি রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস লিমিটেড বা আরপিজিসিএল।
সংস্থাটির দেখা তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর ১ থেকে দেড় মিলিয়ন টন গ্যাস বাংলাদেশে রফতানি করবে করার চুক্তি রয়েছে ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল বা ওকিউ ট্রেডিং লিমিটেডের সঙ্গে। ২০১৮ সালের ৬ মে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে চুক্তি করে কোম্পানিটি। চুক্তির আওতায় দেশটি এখনও পর্যন্ত ৭৩ টি এলএনজি বাহী কার্গেো সরবরাহ করেছে। এর মধ্যে ২০১৯ সালে ২০ টি, ২০২০ সালে ২৬ টি, ২০২১ সালে ২৪ টি এবং ২০২২ সালে মার্চ পর্যন্ত ৩ টি কার্গো সরবরাহ করেছে। তবে চলতি বছরে দেশটির ১৬ টি সরবরাহে পরিকল্পনা রয়েছে ।
দেশে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা ৩৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট। অথচ সরবরাহ হচ্ছে ৩ হাজার মিলিয়ন ঘনফুটের। মতো। এর মধ্যে কাতার ও ওমান থেকে আমদানি করা এলএনজি সরবরাহ করা হচ্ছে ৭০০-৮০০ মিলিয়ন ঘনফুট। এমনিতে চাহিদার চেয়ে ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের ঘাটতি রয়েছে। তার ওপর কাতার কিংবা ওমানের সরবরাহ ঘাটতি হলে দেশে কী অবস্থা তৈরি হবে তা সহজেই অনুমেয়। এ অবস্থায় ওমান থেকে যে পরিমাণ গ্যাসের সরবরাহ হচ্ছে তা কতোটা গুরুত্বপূর্ন তা সহজেই অনুমেয়।
আরো পড়ুন:
সবাই আমার স্ত্রীকে চোরের বউ বলে আমাকে জামিন দেন
পাসপোর্ট অফিসে কোটি টাকার ঘুষ বাণিজ্য, অনুসন্ধানে দুদক
প্রবাসী বন্ডে কমছে মুনাফার হার
করোনা মোকাবিলায় ওমানের চেয়েও এগিয়ে বাংলাদেশ
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post