তেল রপ্তানি বাড়ানো এবং রাশিয়াকে একঘরে করার প্রচেষ্টায় যোগ দিতে সৌদি আরবকে চাপ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। তবে এখন পর্যন্ত তাতে খুব একটা সাফল্য মেলেনি। বরং পশ্চিমাদের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে চীন-রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতেই আগ্রহী সৌদি আরব।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, তেল-গ্যাস জোগাড় করতে গত ১৫ মার্চ সৌদি আরবে গেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তার মাত্র একদিন আগেই মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি সদলবলে যান যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা উপদেষ্টা ব্রেট ম্যাকগার্ক। বিশ্বে বাড়তি তেল উৎপাদনের সক্ষমতা থাকা হাতেগোনা কয়েকটি দেশের মধ্যে অন্যতম সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।
রুশ জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমাতে সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যের এ দুটির দেশের শীর্ষনেতাদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। কিন্তু তাতে সাড়া দেননি সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ও আমিরাতের যুবরাজ শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ-আল-নাহিয়ান।
২০১৮ সালে সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের পর পশ্চিমা দেশগুলোতে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন যুবরাজ সালমান। রিয়াদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এবং ইয়েমেন যুদ্ধ নিয়েও সৌদির সঙ্গে দূরত্ব বেড়েছে পশ্চিমাদের। এখন পর্যন্ত সৌদি যুবরাজের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে সরাসরি কোনো উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি বাইডেনকে।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক তলানিতে থাকায় চীন ও রাশিয়ার দিকে ঝুঁকছে সৌদি আরব। যদিও ওয়াশিংটনের সঙ্গে এখনো রিয়াদের শক্তিশালী নিরাপত্তা সম্পর্ক রয়েছে। গত মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা ম্যাকগার্কসহ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা সৌদির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেছেন। দুটি সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকে তেল উৎপাদন বাড়ানো এবং ইয়েমেন যুদ্ধের রাজনৈতিক সমাধান খুঁজতে সৌদির ওপর চাপ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। একটি সূত্রের কথায়, যদি মনে করেন, ওয়াশিংটন এ দুটি ফাইল ছেড়ে দেবে, তাহলে আপনি ভুল করছেন।
আরো পড়ুনঃ
- যেসব ভিসার ফি কমালো ওমান
- বাংলাদেশ থেকে পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিতে চায় রোমানিয়া
- সৌদি আরবে একদিনে ৮১ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর
- ইউক্রেনের বাঙ্কারে আটকা পড়েছে ২ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী
- ওমানে প্রবাসীদের নতুন ভিসা ফি নিয়ে প্রবাসীদের মাঝে ধুম্রজাল
যুক্তরাষ্ট্রের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন, ম্যাকগার্ক ইয়েমেনসহ বেশ কয়েকটি ইস্যু নিয়ে কথা বলেছেন। তবে এর বেশি কিছু জানাতে রাজি হননি তিনি। অন্যদিকে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন রাশিয়ার তেল-গ্যাসের ওপর নির্ভরতা কমানো এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ওপর চাপ বাড়ানোর ক্ষেত্রে সৌদি ও আমিরাতকে ‘প্রধান আন্তর্জাতিক অংশীদার’ বলে উল্লেখ করেছেন।
তবে আমিরাতের সুপরিচিত রাজনৈতিক বিশ্লেষক আব্দুল খালিক আবদুল্লাহ মনে করেন, মধ্যপ্রাচ্যে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তেমন কিছুই পাবেন না। তাকে খালি হাতেই বাড়ি ফিরতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তাদের সফর প্রসঙ্গে মন্তব্যের জন্য সৌদি সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিল রয়টার্স। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তাতে সাড়া পাওয়া যায়নি। এখন পর্যন্ত রাশিয়াসহ তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর জোট ওপেক প্লাসের সঙ্গে তেল সরবরাহ চুক্তি থেকে সরে আসারও কোনো লক্ষণ দেখায়নি সৌদি আরব।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post