করোনা সংকট নানান বাস্তবতা শিখিয়েছে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও সাধারণ জনগণকে। করোনার শুরুতে সরকারি-বেসরকারি সব সেক্টর স্থবির হয়ে পড়লেও জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগটি সচল ছিল। বর্তমানে ১১ কোটির বেশি ভোটারের সার্ভার দেখভাল ও এনআইডি সংশোধনসহ নাগরিক সেবায় কাজ করে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের আওতাভুক্ত প্রতিষ্ঠানটি।
এদিকে, করোনার কারণে এক মাস বন্ধ ছিল এনআইডি সেবা। তবে পরিস্থিতি সামাল দিতে এনআইডির সকল সেবা অনলাইন ও এসএমএসের মাধ্যমে চালু করে সংস্থাটি। নতুন ভোটার হাওয়া, হারানো কার্ডের ডুপ্লিকেট সংগ্রহ, সংশোধনসহ অন্যান্য সব সেবা বর্তমানে অনলাইনে সেবা পাওয়া যাচ্ছে।
এনআইডির কর্মকর্তারা জানান, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধন, হারানো এনআইডি তোলাসহ সব ধরনের সমাধান ১০৫ নম্বরে কল দিলেই পাওয়া যায়। সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ফোন করে এ সেবা পাওয়া যায়। কল সেন্টারের কার্যক্রম সীমিত পরিসরে থাকলেও করোনা পরিস্থিতিতে এর ব্যাপকতা অনুভব করেছে এনআইডি। যার পরিপ্রেক্ষিতে লোকবল বাড়িয়ে কল সেন্টারের কার্যকারিতা বাড়ানো হয়েছে। ২০১৫ সালে প্রথম কল সেন্টার কার্যক্রম চালু করে এনআইডি।
এনআইডির ওয়েবসাইটে সেবা নেবেন যেভাবেঃ
এনআইডি উইংয়ের ওয়েবসাইটে (https://services.nidw.gov.bd) গিয়ে অনলাইনে এই সেবা পাওয়া যাবে। এই ওয়েবসাইটে গিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি সংগ্রহ (ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছেন কিন্তু এনআইডি কার্ড পাননি), জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর সংগ্রহ, জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন, হারানো জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য আবেদন এবং নতুন ভোটার নিবন্ধন করা যাবে।
এসএমএসের মাধ্যমে এনআইডি নম্বরঃ
মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এনআইডি নম্বর পেতে হলে প্রথমে nid<formNo><dd-mm-zzzz> লিখে ১০৫ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএসের মাধ্যমে এনআইডি নম্বর পাবেন ভোটার।
নতুনদের এনআইডি কপি সংগ্রহঃ
সর্বশেষ হালনাগাদ করা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়া ভোটারের মধ্যে যারা কার্ড পাননি, তারা তাদের নিবন্ধন ফরম নম্বর ও জন্ম তারিখ দিয়ে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করবেন।বায়োমেট্রিক তথ্য যাচাই শেষে এনআইডি কপি বা নম্বর পাবেন তারা। তবে দ্বৈত ভোটার হলে এনআইডি কপি বা নম্বর পাওয়া যাবে না।
এনআইডি নম্বর পেতে হলেঃ
যারা রেজিস্ট্রেশন করেছেন কিন্তু এনআইডি কার্ড পাননি তারা (https://services.nidw.gov.bd) ওয়েবসাইটে ‘অন্যান্য তথ্যের’ ট্যাবে গিয়ে এনআইডি নম্বর লিংকে ফরম নম্বর ও DOB (Date of Birth) দিলে এনআইডি নম্বর পাবেন।
নতুন ভোটারদের অনলাইনে এনআইডি পেতে চাইলেঃ
যারা এনআইডি নম্বর পেয়েছেন তারা (https://services.nidw.gov.bd) ওয়েবসাইটে তথ্য ও মোবাইল নম্বর দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে লগইন করতে পারবেন। লগইনের পর আবেদনকারী তার ফরমের এন্ট্রি করা সকল ডাটা দেখতে পাবেন। রেজিস্ট্রেশন করা ব্যক্তি যদি আগে কার্ড না পেয়ে থাকেন, তিনি এনআইডি ডাউনলোড করতে পারবেন।
হারানো ও সংশোধন পদ্ধতিঃ
জাতীয় পরিচয়পত্র হারিয়ে গেলে অথবা সংশোধন করতে চাইলে প্রয়োজনীয় দলিলপত্র সংযুক্ত করে অনলাইনে আবেদন করা যাবে। আবেদনকারী এনআইডি কার্ডের আবেদনের বর্তমান অবস্থান জানতে পারবেন। আবেদন অনুমোদিত হলে তিনি এসএমএস পাবেন এবং ওয়েবসাইট থেকে এনআইডি কপি সংগ্রহ করতে পারবেন।
নতুন ভোটার হওয়ার পদ্ধতিঃ
যেসব যোগ্য নাগরিক ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হননি তারা অনলাইনে (https://services.nidw.gov.bd) ভোটার হওয়ার জন্য নতুন নিবন্ধনের আবেদন করতে পারবেন।পরে সংশ্লিষ্ট থানা, উপজেলা ও আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে গিয়ে বায়োমেট্রিক তথ্য (আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিশের প্রতিচ্ছবি) দিয়ে রেজিস্ট্রেশন সম্পূর্ণ করতে পারবেন। পরে তাদের আবেদন যাচাই বাছাই করে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে এবং জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হবে।
হেল্পলাইনঃ
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের হেল্পলাইন ১০৫ নম্বরে ফোন করে এনআইডি সংক্রান্ত সকল সেবা পাওয়া যাবে। বিশেষ কোনো সংশোধনের জন্য কার কাছে যেতে হবে, সেটিও ১০৫ নম্বরে ফোন দিয়ে জানতে পারবেন সাধারণ জনগণ। বর্তমানে বেশিরভাগ লোক না জেনে এনআইডি সেবা পেতে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের প্রধান কার্যালয়ে ভিড় করছেন।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post