দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন নিয়ে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়েছে আতঙ্ক। ভাইরাসের নতুন এই ধরনটি ঠিক কতটা ভয়ঙ্কর সেটি জানতে সারা বিশ্বেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। তবে সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণা বলছে, ভাইরাসের ডেল্টা বা মূল করোনাভাইরাসের তুলনায় ৭০ গুণ বেশি দ্রুতগতিতে মানুষকে সংক্রমিত করতে পারে ওমিক্রন।
বুধবার এক বিবৃতিতে হংকংয়ের ওই বিশ্ববিদ্যালয়টি জানায়, সংক্রমণের ২৪ ঘণ্টা পরে মানব ব্রঙ্কাসে ওমিক্রনের বিস্তারের সুপারচার্জড গতি পাওয়া গেছে। মাইকেল চ্যান চি-ওয়াইয়ের নেতৃত্বে ইউনিভার্সিটি অব হংকংয়ের একদল গবেষক এই গবেষণায় অংশ নেন।
গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষের ফুসফুসের টিস্যুতে সংক্রমণের মাধ্যমে মূল করোনাভাইরাস যে ধরনের গুরুতর ক্ষতি করতে পারে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে গুরুতর অসুস্থতার সম্ভাবনা তার চেয়ে ‘১০ গুণেরও অধিক’ কম।
এতে আরও বলা হয়েছে, একজনের কাছ থেকে অন্যজন সহজে সংক্রমিত হলেও ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট আক্রান্ত ব্যক্তির ফুসফুসের ততটা ক্ষতি করে না যতটা ভাইরাসের পূর্ববর্তী স্ট্রেনগুলো করতে পারে।
দক্ষিণ আফ্রিকার সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওমিক্রন সুপার-স্প্রেডার, দ্রুতগতিতে ছড়াতে পারে। তবে এর গুরুতর অসুস্থতা সৃষ্টির ক্ষমতা ভাইরাসের ডেল্টা ধরনের চেয়ে অনেক কম। ওমিক্রনের কারণে কোনো জটিল রোগও হতে দেখা যায়নি।
এছাড়া ডেল্টার চেয়ে ওমিক্রনে সংক্রমণের উপসর্গও কিছুটা আলাদা। ওমিক্রনে সংক্রমিতদের সাধারণ কিছু উপসর্গ হচ্ছে- প্রচন্ড মাথা ব্যথা, হাত-পাসহ শরীর ব্যথা, গলা ব্যথা, ক্লান্তি ও গলা শুকিয়ে যাওয়া। এছাড়া ওমিক্রনে আক্রান্ত হলে পালস রেট এবং শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যেতে পারে। এর পাশাপাশি সংক্রমণ বেশি হলে প্রচন্ড ক্লান্তি, শরীর ব্যথা ও মাথা ব্যথা শুরু হচ্ছে।
এদিকে ওমিক্রনের সংক্রমণ ও ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে বর্তমানে প্রচলিত করোনা টিকাগুলো কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে কিনা- তা নিয়ে সন্দিহান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। বুধবার বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতি বিষয়ক সাপ্তাহিক প্রতিবেদনে এ শঙ্কা জানিয়েছে ডব্লিউিএইচও।
সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘টিকার ডোজ সম্পূর্ণ করা বা করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে ওঠার পর মানবদেহে এই রোগটিকে ঠেকাতে যে প্রতিরোধ শক্তি তৈরি হয়, তাকে ওমিক্রন ফাঁকি দিতে পারে কি না- আমরা এখনও নিশ্চিত নই। এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে আমাদের আরও তথ্য প্রয়োজন।’
‘তবে আমদের হাতে যেসব তথ্য রয়েছে, সেগুলো বলছে করোনাভাইরাসের নতুন এই ধরনটি মানুষের জন্য সার্বিকভাবে অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। এমনকি, বাজারে বর্তমানে প্রচলিত করোনা টিকাগুলো এই যদি এই ধরনটির সংক্রমণ ও বিস্তৃতি ঠেকাতে অকার্যকর হয়, তাহলেও খুব অবাক হওয়ার মত ঘটনা হবে না সেটি।’
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post