১৮-৫০ বছর বয়সী বিদেশী মুসুল্লিদের জন্য ওমরা হজ পালন করার অনুমতি দিয়েছে সৌদি সরকার। এখন থেকে যাদের বয়স এ সীমারেখার মধ্যে কেবলমাত্র তারাই ওমরা হজ পালনের সুযোগ পাবেন। শুক্রবার (১৯-নভেম্বর) এমন সংবাদ প্রকাশ করেছে গালফ নিউজ।
সৌদি আরবের ওমরাহ ও হজ্জ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ওমরা হজ পালন করার জন্য ভ্রমণের আগে বিদেশীদেরকে সৌদি কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত করোনার পূর্ণ ভ্যাকসিন নিতে হবে। বিদেশীদের করোনা ভ্যাকসিন নেয়ার এ তথ্য সরকারিভাবে স্বীকৃত হতে হবে। এরপর সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ইলেকট্রনিক এন্ট্রি ভিসা সরবরাহ করা হবে।
বর্তমানে সৌদি আরবের ওমরাহ ও হজ্জ মন্ত্রণালয় বিদেশীদের ওমরা হজ পালন করা সুযোগ দিয়ে একটি সেবা কার্যক্রম চালু করেছে। এ সেবা কার্যক্রমের আওতায় বিদেশী ওমরা হজ পালনকারীরা মক্কার মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববীতে ইবাদতের অনুমতি পাবেন। সৌদি ওমরাহ ও হজ্জ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ইটমার্না ও তাওয়াক্কলনা স্বাস্থ্য অ্যাপ চালু করা হয়েছে। এ অ্যাপের মাধ্যমে বিদেশী ওমরা হজ পালনকারীরা এ সংক্রান্ত সকল সেবা পাবেন।
আরবি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী তারিখটি পহেলা মোহররম ১৪৪৩। সৌদির হজ ও ওমরাহ বিষয়ক হারামাইন শারিফাইন নামক অফিসিয়াল পেইজে এমন তথ্য দেয়া হয়েছে।
তবে এবারে বিদেশ থেকে ওমরাহ পালনে আসতে ইচ্ছুক মুসুল্লিদের ওপর কিছু শর্ত আরোপ করা হয়েছে। সেগুলো হলো:
ওমরাহ করতে ইচ্ছুক মুসল্লিরা কেবল ৯টি দেশ ছাড়া বিশ্বের সব দেশ থেকে সরাসরি ফ্লাইটে সৌদি আরবে প্রবেশ করতে পারবে।
ওই ৯টি দেশ হচ্ছে- ভারত, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, মিসর, তুরস্ক, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা ও লেবানন।
ওমরাহ পালনে বিদেশ থেকে আসা প্রত্যেক মুসল্লিকে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা- যেমন মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা – এবং সেইসঙ্গে স্বাস্থ্য নির্দেশিকা মেনে চলতে হবে বলে জানানো হয়। করোনাভাইরাস সংক্রান্ত সব ধরনের সাবধানতা এবং নিয়ম-কানুন কঠোরভাবে মেনেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে বলে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে।
করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে সম্প্রতি বিশেষ শর্ত মেনে সীমিত পরিসরে হজ আয়োজন করে সৌদি সরকার। বাইরের দেশ থেকে কাউকে অনুমোদন দেয়া না হলেও কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে সেখানে ৬০ হাজার মুসল্লি অংশ নিয়েছিলেন। এরমধ্যে সৌদি নাগরিকদের পাশাপাশি দেশটিতে থাকা ১৫০টি দেশের নাগরিকও ছিলেন।
এর আগে গত বছরের পহেলা নভেম্বর থেকে সৌদি আরবের বাইরে বিভিন্ন দেশ থেকেও সীমিত সংখ্যক মুসল্লিদের মসজিদুল হারামে প্রবেশের সুযোগ দেয়া হয়েছিল। তার আগের মাসে অক্টোবরে সৌদি নাগরিক ও বাসিন্দাদের ওমরাহ পালনের অনুমতি পেয়েছিলেন।কিন্তু বিশ্বের কয়েকটি দেশে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ও তৃতীয় ঢেউ ছড়িয়ে পড়ায় সংক্রমণ এড়াতে তা স্থগিত হয়ে যায়।
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের আগে হজ এবং ওমরাহ পালনের জন্য প্রতি বছর সারা বিশ্ব থেকে লাখ লাখ মুসল্লি সৌদি আরব ভ্রমণ করতেন। অন্যান্য বছরগুলোয় সারা বিশ্ব থেকে ২০ লাখের বেশি মানুষ হজ পালন করতে সৌদি আরবের মক্কা ও মদিনায় গিয়ে নির্দিষ্ট কিছু ধর্মীয় আচার পালন করতেন। এছাড়া, সারা বছরই ওমরাহ হজ পালন করতে বিশ্বের আরও লাখ লাখ মুসলমান সৌদি আরবে ভ্রমণ করতেন।
২০১৯ সালে এক কোটি ৯০ লাখ মানুষ ওমরাহ পালন করেছিলেন। কিন্তু করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে এখন পুরো পরিস্থিতি ওলট পালট হয়ে গেছে। হজ হল এমন একটি আনুষ্ঠানিকতা যা প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমানদের সারা জীবনে অন্তত একবার হলেও পালন করতে হয়, যদি তাদের সেই সামর্থ্য থাকে এবং শারীরিকভাবে সক্ষম হন।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post