আমি নাতাশা, প্রবাসীদের সঙ্গে ভিডিও কলে অন্তরঙ্গ সময় কাটাই। ৩০ মিনিট ৫৫০ টাকা, ঘণ্টায় ১ হাজার টাকা। আগ্রহী প্রবাসীরা ………… নাম্বারে যোগাযোগ করুন। প্রবাসীদের প্রলুব্ধ করে সামাজিকযোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন সাইটে এভাবেই প্রচারণা চালাচ্ছে একদল প্রতারকচক্র।
প্রবাসভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম ও ফেসবুক গ্রুপে যৌন উত্তেজক বিজ্ঞাপন প্রচার করছে তারা। শুধুমাত্র প্রবাস টাইমের ফেসবুক পেইজ ও ইউটিউব চ্যানেলের নিউজ লিংকে প্রতিদিন এরকম শতাধিক কমেন্টস করা হয়। যদিও প্রবাস টাইম কর্তৃপক্ষ সেনসিটিভ কমেন্টস সেন্সর করে রাখে।
তবুও দেখা যায়, নাতাশা, মনিকা, লিজা, সাবরিনা, সানজানা, ডায়নাসহ অনেকে নিয়মিত একই কাজ করে যাচ্ছে। তারা কমেন্টস বক্সে খোলামেলা ছবি দিয়েও প্রবাসীদের নজর কাড়ার চেষ্টা করে। দেখা যায়, পরিবার থেকে দীর্ঘদিন বিদেশে থাকা প্রবাসীরা সহজেই এ প্রতারণার ফাঁদে পা দিচ্ছে। এর মাধ্যমে অনেকে হারিয়েছেন লাখ লাখ টাকা।
আবার অনেকে সম্মান বাঁচাতে আত্মহত্যাও করেছেন। কারণ এই প্রতারকদের প্রধান উদ্দেশ্য থাকে ভিডিওতে অন্তরঙ্গ মুহূর্ত ধারণ করে প্রবাসীদের জিম্মি করা। পরে ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক টাকা আদায় করা হয়। সম্প্রতি বাংলাদেশে এরকম বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। এমনকি স্বর্ণা নামে একজন অভিনেত্রীও একই কায়দায় এক প্রবাসীর কাছ থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
ওই প্রবাসী এখন প্রায় নিঃস্ব হয়ে গেছেন। এছাড়া টাকা দিতে না পারায় কয়েকজনের ভিডিও ফেসবুক-ইউটিউবে ছড়িয়ে দেয় প্রতারকচক্র। এতে আত্মহত্যাও করেছেন কেউ কেউ। প্রবাস টাইমের নিউজ লিঙ্কের কমেন্টসে দেয়া নাম্বারে নাতাশা নামে একজনের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করার চেষ্টা করি। কিন্তু বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
পরে লিজা নামে একজনের মোবাইলে কল দেয়া হলে রবীন নামে এক যুবক রিসিভ করেন। লিজাকে চাওয়া হলে রবীন জানান, আগে তার সঙ্গে চুক্তিতে আসতে হবে। নাম ঠিকানাসহ অগ্রিম ৫০০ টাকা পাঠাতে বলেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক ঘণ্টা লাইভে থাকার জন্য ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত নেন এসব প্রতারক চক্র। আবার অনেক ক্ষেত্রে গ্রুপ চ্যাটিং চালাতে মেয়েদের ভাড়া নেয়া হয়। সেক্ষেত্রে তারা গ্রুপ লাইভ করে। পাশাপাশি চ্যাটিংয়ের মাধ্যমে যোগাযোগ করে ফোন নম্বর সংগ্রহ করে।
তাদের প্রধান টার্গেট প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এছাড়া অনেক সময় অনলাইনেও অফার দেয়া হয়। এক ঘণ্টা ভিডিও কলে অন্তরঙ্গ চ্যাট করলে বিনিময়ে ২ হাজার টাকা দেয়া হবে। প্রবাসীরা একাকি জীবনযাপন করে; নিঃসঙ্গতা দূর করতে এসব ফাঁদে পা দেয় তারা।
সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে অবস্থানরত প্রবাসীরা প্রতিনিয়ত এ প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। সিঙ্গাপুরের জাতীয় দৈনিক স্ট্রেইট টাইমস এর মতে, ২০১৭ সালের তুলনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছদ্মবেশী প্রতারকদের দৌরাত্ম্য ৯ গুণ বেড়েছে। ২০১৭ সালে ভুক্তভোগী ছিল ৭১ জন। ২০১৯ সালের প্রথম ১১ মাসে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭২ জনে। এই প্রতারণা থেকে সাবধান থাকতে প্রবাসীদের পরামর্শ দিয়েছেন অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post