মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম, কাসাব, ওমান
ওমানের আইন মেনে চলতে প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোঃ মিজানুর রহমান। সেইসাথে ওমানের মাটিতে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয় এমন সব কাজ থেকেও প্রবাসীদের বিরত থাকার অনুরোধ জানান তিনি। গত ১৬ এবং ১৭ সেপ্টেম্বর ওমানের কাসাব প্রবাসীদের পাসপোর্ট ও কনস্যুলার সেবা দেওয়ার সময় এ কথা বলেন রাষ্ট্রদূত।
প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রদূত বলেন, দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয় এমন কোন কাজ থেকে আমাদের সবাইকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে, আমরা এসেছি রুজিরোজগারের জন্য, তাই এদেশের যাবতীয় নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে নিজেদের সম্মান ধরে রাখতে হবে। এছাড়া ওমানের সাথে বাংলাদেশের ব্যাবসায়ীক কার্যক্রম কিভাবে বাড়ানো যায় এবিষয়ে তিনি সকলকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে ও যথাযথ পরামর্শ দিতে অনুরোধ জানান।
এ সময় কাসাব প্রবাসীদের বিভিন্ন সমস্যা রাষ্ট্রদূতের কাছে তুলে ধরেন মুসান্দাম অঞ্চলের বাংলাদেশী জুডিশিয়াল ইন্টারপ্রেটার মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম। দূতাবাসের সেবা প্রবাসীদের জন্য আরো সহজীকরণ এবং দুদেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়াতে রাষ্ট্রদূতকে অবহিত করলে তার এই পরামর্শকে অত্যন্ত গণমুখী বলে বিবেচনায় আনেন রাষ্ট্রদূত।
প্রবাসীদের দোরগোড়ায় দূতাবাসের সেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষে গত ১৬ এবং ১৭ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রদূত সহ দূতাবাসের কনসুলার টিম মুসান্দাম প্রদেশের খাসাবে দুদিনব্যাপী কনসুলার সেবা প্রদান করে।
এসময় রাষ্ট্রদূতের নেতৃত্বে দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলর হুমায়ূন কবির, প্রথম সেক্রেটারি (পাসপোর্ট) মিসেস রওশন আরা পলি এবং গালফ এক্সচেঞ্জের প্রধান নির্বাহী ইফতেখার চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। এ সময় প্রবাসীদেরকে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের রেজিষ্ট্রেশনের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা বুঝিয়ে বক্তব্য দেন দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলর হুমায়ুন কবির।
প্রবাসীদের অতি দ্রুত এই সেবা গ্রহণ করতে আহ্বান জানান তিনি। হুমায়ুন কবির বলেন, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মেম্বার হতে ১৭ রিয়াল খরচ হলেও এক সময় ৭০ লাখ টাকার কাজ দিবে।
এসময়, গাল্ফ এক্সেঞ্জের প্রধান নির্বাহী ইফতেখার চৌধুরী তার বক্তব্যে প্রবাসীদেরকে বৈধ চ্যানেলে টাকা পাঠানোর গুরুত্ব বুঝান এবং সবাইকে নিজের নামে একাউন্ট করার নির্দেশনা দেন। প্রবাসীদেরকে দেশের যে কোন ব্যাংকে একাউন্ট করার জন্য তিনি গাল্ফ এক্সেঞ্জের পক্ষ থেকে সকল সহযোগীতা করারও আশ্বাস দেন। তিনি তার বক্তব্যে আরো বলেন, “আমরা প্রত্যেক প্রবাসী একেকজন নন অফিসিয়াল রাষ্ট্রদূত, সুতরাং আমরা যেনো আমাদের আচরণে দেশের সম্মান বয়ে আনার প্রতিনিধিত্ব করি।”
সবশেষে পাসপোর্ট সেকশনের প্রথম সচিব মিসেস রওশন আরা পলি প্রবাসীদের পাসপোর্ট রি ইস্যুর ফাইল গ্রহণ করেন এবং কিছু পাসপোর্ট ডেলিভারি দেন। কাউন্সিলর হুমায়ুন কবির নতুন করে ইস্যু হওয়া ভিসা সত্যায়ন করেন এবং প্রবাসীদেরকে আইনি পরামর্শ দেওয়ার মধ্যে দিয়ে কনসুলার টিমের কার্যক্রম সমাপ্ত ঘোষণা করেন।
উল্লেখ্য শ্রম কাউন্সিলর হুমায়ুন কবির তার নিয়োগের পর থেকেই দূতাবাসের শ্রম বিভাগকে মধ্যসত্বভোগীদের দালালদের হাত থেকে মুক্ত করার জন্য নানামুখী পদক্ষেপ হাতে নেন এবং এতে তিনি বেশ সফলতার স্বাক্ষর রাখেন বলে জানান ওমান প্রবাসীরা।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post