বিশ্বের অনেক কোম্পানিতে মালিক ও কর্মীদের মধ্যে সম্পর্ক থাকে অনেকটা যান্ত্রিক। সেখানে কর্মীদের সঙ্গে মালিকের পরিচয়ও থাকে না। তবে ব্যতিক্রমও দেখা যায়। সম্প্রতি ভারতীয় বংশোদ্ভূত আরব আমিরাতের ধনকুবের ইউসুফ আলী এমএ তার অফিসের এক সাধারণ কর্মীর জানাজার নামাজ নিজে পড়িয়েছেন। শুধু তাই নয়, কর্মীর কফিনও বহন করেছেন এই বিলিয়নিয়র।
জানা গেছে, শিহাবুদ্দিন নামের ওই কর্মী লুলু গ্রুপে প্রায় ১৮ বছর ধরে কাজ করছিলেন। কর্মস্থলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান। শিহাবুদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে লুলু গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতার দীর্ঘদিনের সম্পর্ক রয়েছে। শিহাবুদ্দিনের বাবাও একসময় এই কোম্পানিতে কাজ করতেন এবং বর্তমানে তার ভাইও কর্মরত আছেন।
তবে শুধু পারিবারিক সম্পর্কের কারণেই ইউসুফ আলী শিহাবুদ্দিনের জানাজায় যাননি। লুলু গ্রুপের এক কর্মী জানান, ইউসুফ আলী তার কোম্পানির যেকোনো কর্মীর মৃত্যুর খবর পেলে জানাজায় উপস্থিত থাকার চেষ্টা করেন। এমনকি মৃত কর্মীর পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা জানাতে তাদের বাড়িতেও যান তিনি।
কোম্পানির কর্মীরা ইউসুফ আলীকে ভালোবেসে ‘ইউসুফ ভাই’ বলে ডাকেন। তাদের কাছে তিনি শুধু কোম্পানির মালিক নন, একজন আপনজন। ইউসুফ আলী কর্মীদের সঙ্গে পারিবারিক সদস্যের মতো ব্যবহার করেন। তাদের সুখ-দুঃখের খবর নেন।
ওই কর্মী আরও জানান, ইউসুফ আলী শহরে থাকলে যেকোনো কর্মীর মৃত্যুর সময় তিনি তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করেন। এমনকি দেশের বাইরে থাকলেও কর্মীদের প্রতি তার ভালোবাসা কম থাকে না। কোনো কর্মীর মৃত্যু সংবাদ পেলে তিনি ছুটে যান এবং পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান। এটি তার একটি সহজাত প্রবৃত্তি।
লুলু গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ইউসুফ আলী শুধু একজন সফল ব্যবসায়ী নন, একজন মানবিক মানুষ হিসেবেও পরিচিত। তিনি তার কর্মীদের ভালোবাসেন এবং তাদের পরিবারের প্রতিও সহানুভূতিশীল। তার এই মানবিক দৃষ্টান্ত সত্যিই প্রশংসার যোগ্য।
উল্লেখ্য, ইউসুফ আলী আরব আমিরাতের অন্যতম ধনী ভারতীয় ব্যক্তি। ফোর্বসের তথ্য অনুযায়ী, তার মোট সম্পদের পরিমাণ ৬ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার এবং বিশ্বের ধনীদের তালিকায় তিনি ৪৬০তম স্থানে রয়েছেন।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।

Discussion about this post