ওয়াশিংটনের হোয়াইট হাউজে দ্বিতীয়বারের মতো মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি, অর্থনীতি ও বৈশ্বিক সম্পর্কে নতুন মোড় নেওয়ার ইঙ্গিত মিলছে।
তবে এই পরিবর্তনের মধ্যেও বাংলাদেশের জন্য একটি সুখবর নিয়ে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে বাংলাদেশে রেমিটেন্স প্রেরণে শীর্ষস্থান দখল করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে প্রেরিত রেমিটেন্সের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১.৪ বিলিয়ন ডলার। এটি বাংলাদেশের রেমিটেন্স প্রবাহের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক। এর আগে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) রেমিটেন্স প্রেরণে শীর্ষস্থানে থাকলেও বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র এগিয়ে রয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের অর্থনৈতিক নীতি, বিশেষ করে প্রটেকশনিজম বা দেশীয় শিল্প রক্ষার নীতি, বিশ্বব্যাপী আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। তিনি চীনসহ বিভিন্ন দেশের রপ্তানির ওপর ৬০% শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন, যা বৈশ্বিক বাণিজ্যে নতুন উত্তেজনা তৈরি করেছে।
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পে এর প্রভাব তুলনামূলকভাবে কম হবে। কারণ বাংলাদেশের রপ্তানি চীনের তুলনায় অনেক কম এবং সস্তা শ্রমের কারণে প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা রয়েছে।
তবে ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি বাংলাদেশের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে। তিনি অবৈধ অভিবাসন রোধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন, যা বাংলাদেশি অভিবাসীদের জন্য বাড়তি চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি শ্রমবাজারের প্রবেশাধিকার কঠিন হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে, রেমিটেন্স বৃদ্ধি বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য একটি ইতিবাচক সংকেত। রেমিটেন্স দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানোর পাশাপাশি গ্রামীণ অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি প্রবাসীদের আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বৈধ পথে রেমিটেন্স প্রেরণের সুযোগ বাড়ানোই এই সাফল্যের মূল কারণ।
ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে বৈশ্বিক বাণিজ্য ও অভিবাসন নীতিতে পরিবর্তনের প্রভাব বাংলাদেশকে প্রস্তুত থাকতে হবে। তবে রেমিটেন্স প্রবাহে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ অবস্থান বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য একটি উজ্জ্বল সম্ভাবনা হিসেবে দেখা দিয়েছে।
আগামী দিনগুলোতে এই প্রবাহ ধরে রাখতে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।

Discussion about this post