রাজধানীর উত্তরা র্যাব-১ বাউন্ডারির পাশেই রয়েছে র্যাবের আয়না ঘর। ওই ভবনের দ্বিতীয় তলা ও আন্ডারগ্রাউন্ডেই ছিল র্যাবের আয়নাঘর। ওই আয়নাঘরে আটক রেখেই নির্যাতন করা হতো বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মী, ব্যবসায়ীসহ নানা শ্রেনী পেশার মানুষকে। এখানে আটকে রেখে বন্দীদের নির্যাতনের ভয়াবহতা এখনও বিদ্যমান। যা দেখে হতবাক পরিদর্শনকারীরা। তবে ওই আয়নাঘর পরিচালনা করা হতো র্যাবে থাকা সেনা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে। পুলিশ বা অন্য কোন সংস্থার কর্মকর্তা ও সদস্যদের এর কাছেও যেতে দেয়া হতো না। এমন তথ্য তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। গতকাল মঙ্গলবার ওই ভবনের আয়নাঘর পরিদর্শন করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কো-অর্ডিনেটর সাবেক পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ চৌধুরী। এ সময় সিআইডির ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কো-অর্ডিনেটর সাবেক পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, র্যাবের আয়নাঘরের বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। মঙ্গলবার আমরা এটি পরির্দশন করেছি। তাই তদন্তাধীন বিষয়ে কোন কথা বলা ঠিক হবে না।
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লে. কর্নেল মো. মুনীম ফেরদৌস গণমাধ্যমকে বলেন, র্যাবের যে ভবনে আয়নাঘর ছিল সেটি এখন সংরক্ষন করে রাখা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার নির্দেশের বাইরে ওই ভবনে কারো প্রবেশের অনুমতি নেই। র্যাবের পক্ষ থেকে এটি সার্বক্ষনিক পাহারায় রাখা হয়েছে।
পরির্দশনে যাওয়া এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, পরির্দশনের সময় মনে হয়েছে বাস্তবতা বড়ই ভয়াবহ ও বিভীষিকাময় এক চিত্র প্রকাশ করে। আয়নাঘরের ছোট ছোট কুঠুরিতে গুম হওয়া মানুষদেরকে বন্দি করে রাখা হতো। তাদের সার্বক্ষণিক চোখ বন্ধ করে রাখা হতো। গুহার ভেতর দিন-রাতের কোনো পার্থক্য করা যেতো না। তাদের খাবার, ঘুম ও অন্যান্য কাজকর্ম সারতে হতো চোখ বাঁধা অবস্থায়। এখানে অন্য বন্দিদের কেউ কাউকে দেখতে পেতো না। দম বন্ধ করা মৃত্যুকূপে অনেকের বছরের পর বছর কেটেছে। কেউ কেউ সেখানে মৃত্যুবরণ করেছেন। এমনটিই মনে হয়েছে পরিদর্শনের সময়।
গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাব মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি একেএম শহিদুর রহমান বলেছিলেন, র্যাবে আয়না ঘর, গুম, খুনসহ যতো ধরণের অভিযোগ র্যাবের বিরুদ্ধে ছিল তার তদন্ত করছে কমিশন। আমরা র্যাবের পক্ষ থেকে সব ধরণের সহায়তা করছি। আমরা মনে করি, তদন্তের ফলাফলের ভিত্তিতেই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।
![city](https://probashtime.net/storage/2024/09/city-flat.webp)
Discussion about this post