শপথ নেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন, যা জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকার বাতিল করে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নেওয়ার পর এই সিদ্ধান্তটি ট্রাম্প প্রশাসনের এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত করে।
স্থানীয় সময় সোমবার (২০ জানুয়ারি) শপথ গ্রহণের পরপরই তিনি এই আদেশে স্বাক্ষর করেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, এই আদেশ অনুযায়ী, অবৈধ উপায়ে বা সাময়িক ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে এসে জন্ম নেওয়া শিশু আর নাগরিকত্ব পাবে না। তবে যদি শিশুটির বাবা-মায়ের অন্তত একজন মার্কিন নাগরিক হন, তাহলেই নাগরিকত্ব প্রাপ্তি নিশ্চিত হবে।
নির্বাহী আদেশে সই করার সময় ট্রাম্প স্বীকার করেন যে, জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অধিকার যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে সুরক্ষিত। ফলে এই সিদ্ধান্ত আইনি জটিলতার মুখে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ট্রাম্পের মতে, জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের বিধানটি ‘হাস্যকর’ এবং এটি সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা দীর্ঘদিন ধরেই অনুভূত হচ্ছে।
গত ১৫০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী প্রতিটি শিশুই জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব পেয়ে আসছে। তবে ট্রাম্প এই সাংবিধানিক অধিকারকে সমালোচনা করে বলেন, “এটি পরিবর্তনের সময় এসেছে।” তার মতে, এই বিধান বাতিল করার পেছনে শক্তিশালী আইনগত যুক্তি রয়েছে।
মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জন রবার্টসের কাছ থেকে শপথ নেওয়ার মাধ্যমে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। শপথ নেওয়ার পর তিনি পূর্ববর্তী বাইডেন প্রশাসনের ৭৮টি নির্বাহী আদেশ বাতিল করেন।
এর মধ্যে রয়েছে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে সরে আসা, মেক্সিকো সীমান্তে জরুরি অবস্থা ঘোষণা, বিদেশি পণ্যের আমদানিতে শুল্ক বৃদ্ধি এবং পানামা খালের পুনরুদ্ধার সংক্রান্ত ঘোষণাগুলো।
এছাড়াও, ২০২১ সালে ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে আটক হওয়া প্রায় ১,৫০০ জনকে তিনি ক্ষমা করেছেন।
ট্রাম্পের এই পদক্ষেপগুলো তার দ্বিতীয় মেয়াদের প্রশাসনিক দৃষ্টিভঙ্গি ও পরিকল্পনার একটি পরিষ্কার নির্দেশনা দিচ্ছে। তবে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলের মতো বিতর্কিত সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে বড় আইনি লড়াইয়ের সূত্রপাত করতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।

Discussion about this post