রাজশাহীতে ভিসা করে দেওয়ার নাম করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারক দম্পতি। না বুঝে তাদের ফাঁদে পরে অর্থ খোয়ানোসহ হয়রানির শিকার হচ্ছেন অনেকেই। এই দম্পতি ভারতীয় ভিসা অনলাইনে আবেদন ও ভিসা পাইয়ে দেওয়ার নামে প্রতারণার দোকান খুলে বসেছে খোদ ভিসা আবেদন জমা দেওয়ার অফিসের গেটেই।
রাজশাহী মহানগরীর বর্ণালী মোড়ে মরিয়ম টাওয়ারে ভারতীয় ভিসার আবেদন জমা দেওয়ার কার্যালয়। তার গেটেই রয়েছে একটি ঘর। সেখানে লেখা রয়েছে ‘রহমান লাইফ সলুশন’। ভিতরে রয়েছে একটি কম্পিউটার, একটি প্রিন্টার, একটি টেবিল ও তিনটি চেয়ার। সেখানে বসে আখতারি সুলতানা জলি ও তার স্বামী আবু সাঈদ রহমান। তাদের অফিসের ভিজিটিং কার্ডে লেখা রয়েছে ‘রহমান লাইফ সলুশন’। আর এই প্রতিষ্টানের চেয়াম্যান উল্লেখ করা হয়েছে আখতারি সুলতানা জলিকে। মুলতঃ ভিসা প্রার্থীদের আবেদন করে দেওয়ার জন্য এ কার্যালয় তৈরী করেছে তারা।
স্থানীয়রা জানায়, আখতারি সুলতানা জলি ভারতীয় ভিসা আবেদন অফিসে চাকরি করতেন। ভিসা প্রার্থীদের নিকট হতে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে চাকরি হারিয়েছে। পরে স্বামী-স্ত্রী মিলে ভিসা অফিসের অফিস গেছে খুলে বসেছে প্রতারণার ফাঁদ।
সোমবার দুপুর ১২টার দিকে সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, এই দম্পতির ফাঁদে পরে হয়রারিন শিকার হওয়া দুই ভূক্তভোগী গোদাগাড়ী উপজেলার আব্দুল খালেক ও এরশাদ আলী তাদের ঘরের সামনে হই চৈই করছে। তাদের অভিযোগ, তারা ভারতে চিকিৎসা করার জন্য রাজশাহী ভারতীয় ভিসা অফিসে আবেদন করি। এই প্রতারক দম্পতি তাদের মোবাইল নং সংগ্রহ করে ভারতীয় ভিসা করে দেওয়া হবে বলে মোবাইল ফোনে জানাই। তাদের দুইজনের কাছে ২০ হাজার টাকা দাবি করে। কিন্ত চিকিৎসা নেওয়া জরুরী বলে তারা ১৫ হাজার টাকা দফারফা করে। প্রাথমিক অবস্থায় তারা দুই হাজার টাকা বিকাশে নেয়। পরে বিভিন্ন কাগজপত্র নিয়ে ডাকলে নগদ ১৩ হাজার টাকা নেয়।
সোমবার তারা ভিসার অফিসে আসলে তাদের পাসপোর্ট ফেরত দেওয়া হয় এবং জানিয়ে দেয় ভিসা হবে না। এ সময় তাদের কাছে টাকা ফেরত চাইলে তাদের সাথে অসালিন আচরণ করে ওই দম্পতি। এর পর তারা বুঝতে পারে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এ সময় টাকা ফেরতের জন্য চাপ দিলে আব্দুর রহমান অফিস থেকে বের হয়ে চলে যায়।
ঘটনাটি গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে পেরে ঘটনাস্থলে গেলে সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে দ্রুত তাদের অফিস ছেড়ে প্রতারক দম্পতি চলে যেতে থাকে। এসময় প্রতারক আব্দুর রহমানের সাথে সাংবাদিকরা কথা বলতে গেলে দাম্ভিকতা দেখিয়ে বলে আপনারা কে। আপনার সাথে কোন কথা নাই, আইনে আছে? পুলিশ ডাকেন। এর পর সেখান থেকে তিনি দ্রুত সটকে পড়েন।
পরে খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠান বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি মেহেদী মাসুদ। এছাড়াও মুঠোফোনে ভূক্তভোগীদের কথা শোনেন ওসি। বিষয়টি শোনের বোয়ালিয়া থানার এসআই হেদায়েত আলীও। তিনি প্রতারক দম্পতির অফিসের কর্মচারী রায়হানের সাথে কথা বলে তাদের তার ঠিকানা জানতে চাইলে দিতে পারেনি।
বোয়ালিয়া মডেল থানার এসআই হেদায়েত আলী বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ভূক্তভোগীদের কথা শুনেছি। তাদেরকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। অভিযোগটি পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post