বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ জেলার সংলগ্ন এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ ঘিরে গত তিন দিন ধরে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সীমান্তের ভারতীয় অংশে মালদহ জেলার সুকদেবপুর এলাকায় বেড়া নির্মাণ শুরু করলে তা নিয়ে দুই দেশের সীমান্তবাসী এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে টানাপড়েন দেখা দেয়।
সীমান্তের বাংলাদেশ অংশে শিবগঞ্জ উপজেলার চৌকা এলাকায় স্থানীয়রা জড়ো হয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষীদের (বিএসএফ) কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করেন।
এসময় ভারতের অংশ থেকে কিছু মানুষ লাঠি, রামদা, কাস্তে হাতে ‘বান্দে মাতরম’ ‘জয় শ্রী-রাম’ স্লোগান দিতে থাকেন, যা বাংলাদেশের অংশে উত্তেজনা ছড়িয়ে দেয়।
পাল্টা স্লোগান হিসেবে বাংলাদেশ অংশ থেকে “আল্লাহু আকবার” এবং “নারায়ে তাকবীর” ধ্বনি শোনা যায়। এই উত্তেজনা সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।
বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিবি) অভিযোগ করে যে, বিএসএফ পূর্ব অনুমতি ছাড়াই সীমান্তের ১০০ গজ ভেতরে বেড়া নির্মাণের কাজ শুরু করে।
৫৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া জানান, সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে যে কোনো নির্মাণ কাজ শুরু করার আগে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে অনুমোদন ও প্রটোকল মেনে কাজ করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু বিএসএফ তা লঙ্ঘন করেছে।
বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার পর উত্তেজনা কিছুটা প্রশমিত হয়। সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ের আলোচনার পর, বৃহস্পতিবার থেকে নির্মাণকাজ বন্ধ রাখা হয়।
ভিডিও ও ছবিতে দেখা গেছে, ভারতীয় অংশের লোকজন মজা করে “বোম, বোম, বোম” বলে বাংলাদেশের দিক লক্ষ্য করে স্লোগান দেয়, যা আরও উত্তেজনার জন্ম দেয়। বাংলাদেশ অংশের স্থানীয়রা জমির নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন।
সীমান্তে উত্তেজনা নতুন কোনো বিষয় না হলেও প্রটোকল না মানলে এটি দুই দেশের শান্তিপূর্ণ সম্পর্কের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।
বিজিবির এক কর্মকর্তা বলেন, “উভয় পক্ষ নিয়ম মেনে না চললে ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে।”
সীমান্ত পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত থাকলেও, উত্তেজনার এই ধরণ দুই দেশের মধ্যে আস্থার পরিবেশ নষ্ট করতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post