ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে ঘুষ ও জালিয়াতির অভিযোগে শক্তিশালী প্রমাণ পাওয়া গেছে। তবে আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আদানির ভারতীয় অবস্থানের কারণে তাকে দ্রুত যুক্তরাষ্ট্রে আনা সম্ভব নাও হতে পারে।
গত নভেম্বরে ব্রুকলিনের ফেডারেল কৌঁসুলি আদানির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে যে, তিনি ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়েছিলেন, যাতে তাদের আদানি গ্রিন এনার্জি উৎপাদিত বিদ্যুৎ কেনার জন্য রাজি করানো যায়। এছাড়া, মার্কিন বিনিয়োগকারীদেরকে মিথ্যা তথ্য দেওয়া হয় কোম্পানির দুর্নীতি বিরোধী কার্যক্রম সম্পর্কে।
রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, গৌতম আদানি, তার ভাতিজা সাগর আদানি এবং আদানি গ্রুপের এক নির্বাহীকে সিকিউরিটিজ জালিয়াতি এবং ষড়যন্ত্রের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া, অ্যাসিওর পাওয়ার গ্লোবালের সঙ্গে সম্পর্কিত পাঁচ ব্যক্তি বিদেশি দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন (এফসিপিএ) লঙ্ঘনের ষড়যন্ত্রের দায়ে অভিযুক্ত হয়েছেন।
অ্যাসিওর জানিয়েছে, তারা তদন্তে সহযোগিতা করেছে এবং যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তারা এখন আর কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত নন। অপরদিকে, আদানি গ্রুপ এই অভিযোগগুলোকে ‘অমূলক’ বলে মন্তব্য করেছে এবং ‘সর্বোচ্চ আইনি পদক্ষেপ’ গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে আদানির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেও তিনি এখনও গ্রেফতার হননি। গত মাসে অভিযোগের পর তিনি ভারতে অন্তত দুটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন, এর মধ্যে ৯ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগের মধ্যে, কৌঁসুলিরা সাগর আদানির সেলফোনে ‘ঘুষ সংক্রান্ত নোটের’ উপস্থিতির প্রমাণ পেয়েছেন। সাগর আদানিকে গ্রেফতার করতে ও ১৭ মার্চের মধ্যে আদালতে হাজির করতে ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) একটি ওয়ারেন্ট জারি করেছে, যার কপিটি আদানিকে ইমেইল করা হয়েছিল।
এই ইলেকট্রনিক রেকর্ডগুলো কৌঁসুলিদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হতে পারে। তারা এসব প্রমাণ উত্থাপন করে এটি প্রমাণ করতে চাইবেন যে, সাগর আদানি ও গৌতম আদানি জানতেন, তারা বিনিয়োগকারীদের বিভ্রান্ত করেছেন। যদিও তারা দাবি করেছিলেন, তাদের দুর্নীতি বিরোধী কার্যক্রম শক্তিশালী, তারা নিজেরাই ঘুষের সাথে জড়িত ছিলেন।
তবে, কৌঁসুলিরা কিছু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে পারেন। গৌতম আদানি দাবি করতে পারেন যে, তিনি ব্যক্তিগতভাবে ওই কোম্পানির মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের যে বিবৃতি দিয়েছিলেন, তাতে কোনো ভূমিকা রাখেননি। মার্কিন কৌঁসুলিদের জন্য ভারতীয় সাক্ষীদের সরাসরি সাক্ষ্য নেওয়া একটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে, কারণ এ প্রক্রিয়ায় ভারতের সরকার সাহায্য করতে অনিচ্ছুক হতে পারে, যা ভারতীয় কর্মকর্তাদের নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করতে পারে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post