ইসরায়েলের কাছে পরমাণু অস্ত্র থাকা সত্ত্বেও, ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে দেশটির উদ্বেগ ক্রমশ বাড়ছে। তেল আবিব দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির চেষ্টায় লিপ্ত। যদিও তেহরান সবসময়ই এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে, তাদের দাবি—তাদের পরমাণু কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ। কিন্তু ইসরায়েল এই দাবি মানতে নারাজ। তাদের আশঙ্কা, ইরানের হাতে পরমাণু অস্ত্র আসলে তা ইসরায়েলের অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।
মধ্যপ্রাচ্যের দুই প্রভাবশালী দেশ ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে শত্রুতা বহুদিনের। সরাসরি সংঘর্ষের ঘটনা বিরল হলেও সাম্প্রতিক সময়ে উত্তেজনা বাড়ছে। সিরিয়ার মাটিতে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে ইরানের ক্ষোভ আরও বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই উত্তেজনা শিগগিরই বড় কোনো সংঘাতের রূপ নিতে পারে।
এরই মধ্যে ইরান ঘোষণা দিয়েছে যে, আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-এর পরিদর্শকদের আগমন আরও বাড়বে। আইএইএ-এর কর্মকর্তারা ইরানের পরমাণু কর্মসূচি পর্যালোচনা করতে সেখানে নিয়মিত যাচ্ছেন। যদিও এই ঘন ঘন পরিদর্শন ইসরায়েলের শঙ্কা আরও বাড়াচ্ছে।
বিশ্বে মাত্র ৯টি দেশের হাতে পরমাণু অস্ত্র রয়েছে। সেই তালিকায় মধ্যপ্রাচ্যের একমাত্র দেশ ইসরায়েল। এশিয়ার ভারত-পাকিস্তান এবং উত্তর কোরিয়ার মতো দেশগুলোর হাতেও এই বিধ্বংসী অস্ত্র থাকলেও ইরান এখনো তা অর্জন করতে পারেনি। ইসরায়েল একাধিকবার অভিযোগ করেছে, ইরান যখনই এই পথে এগিয়েছে, তখনই তাদের বিজ্ঞানীদের লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছে।
ইরানের পরমাণু কর্মসূচির প্রধান মোহাম্মদ এসলামি সম্প্রতি জানিয়েছেন, “আমাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিদর্শনের সংখ্যা বেড়েছে।” আইএইএ-ও নিশ্চিত করেছে যে, ইরান তাদের পরমাণু কর্মসূচি আরও উন্মুক্ত করেছে। তবে ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের হার এখন ৬০ শতাংশে পৌঁছেছে। অথচ পরমাণু অস্ত্র তৈরির জন্য প্রয়োজন ৯০ শতাংশ পর্যন্ত সমৃদ্ধকরণ।
ইরান বর্তমানে গাজা, লেবানন ও সিরিয়ায় তাদের প্রভাব কমতে দেখছে। এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েলের সামরিক ও রাজনৈতিক মহল ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে সরাসরি হামলার পরামর্শ দিচ্ছে। তাছাড়া, ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো ইরানবিরোধী শক্তি যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করলে, তেহরানের অবস্থান আরও চাপে পড়তে পারে।
পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, ইরান হয়তো এখন প্রতিরক্ষামূলক অবস্থান নিচ্ছে। তবে, তাদের ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ যে মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতার ওপর বড় প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post