বাংলাদেশের নওগাঁর দুই ব্যবসায়ী, গোপাল আগরওয়ালা ও দীপা আগরওয়ালা, তাদের দুটি প্রতিষ্ঠান—জেএন ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড এবং শুভ ফিড প্রসেসিং—থেকে ১১৫ কোটি টাকার ঋণ নিয়ে ভারত চলে গেছেন।
তারা ঋণ পরিশোধ না করেই ব্যাংকে বন্ধক রাখা সম্পত্তি ইন্টারন্যাশনাল কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন)কে উইল করে দিয়েছেন। এটি ব্যাংকের আইন লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচিত হয়েছে, কারণ বন্ধকি সম্পত্তি ঋণ পরিশোধের জন্য ব্যবহার করা যায় এবং এর হস্তান্তর বা উইল করা কেবল ব্যাংকের অনুমতি ছাড়া সম্ভব নয়।
এই ঘটনা বাংলাদেশের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)-এর একটি বিশেষ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, গোপাল এবং দীপা আগরওয়ালা ২০১২ সালে সাউথইস্ট ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণের পর একাধিক সন্দেহজনক লেনদেনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
২০১৯ সালে তাদের ঋণের পরিমাণ সুদসহ প্রায় ৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেন যে, ওই ঋণের কিছু অংশ পাচারও হতে পারে।
এছাড়া, ২০১৭ এবং ২০১৮ সালে সাউথইস্ট ব্যাংকের নওগাঁ শাখায় আগরওয়ালা দম্পতির নামে সন্দেহজনক লেনদেন হয় এবং অন্যান্য ব্যাংক হিসাবেও অর্থপাচারের শঙ্কা প্রকাশিত হয়। ২০১৬ ও ২০১৭ সালে তারা বিভিন্ন ব্যাংকে অর্থ স্থানান্তর করে এবং ঋণের কিছু অংশ পরিশোধের বদলে ব্যবসায়িক লেনদেন চালিয়ে যান।
আইনজীবীরা বলছেন, ঋণের বিপরীতে রাখা বন্ধকি সম্পত্তি উইল করা বেআইনি। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোজাহিদুল ইসলাম শাহিন উল্লেখ করেন, ‘ব্যাংকের লিখিত অনুমতি ছাড়া বন্ধকি সম্পত্তি হস্তান্তর করা আইনের বিরুদ্ধ।’
বিএফআইইউর প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০১৯ সালে, গোপাল ও দীপা আগরওয়ালা দম্পতি ঋণ পরিশোধ না করেই ভারতে পালিয়ে যান, যেখানে তারা বর্তমানে অবস্থান করছেন।
সাউথইস্ট ব্যাংক এবং মার্কেন্টাইল ব্যাংকের কর্মকর্তারা এসব লেনদেনের বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। যদিও ব্যাংক কর্তৃপক্ষের তরফে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
এই ঘটনার পর বাংলাদেশ ব্যাংক এবং অন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে, ঋণের সমন্বয়ের বিষয়টি এখনো অনিশ্চিত, এবং সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে স্পষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।

Discussion about this post