মুন্সীগঞ্জের ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে প্রেমিকা শাহিদা ইসলাম রাফাকে পরিকল্পিতভাবে গুলি করে হত্যা করেন প্রেমিক তৌহিদ শেখ তন্ময় (২৩)। প্রেমিকা আড়াই মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় বিয়ের জন্য চাপ দিলে এই নির্মম ঘটনা ঘটে। হত্যায় ব্যবহৃত পিস্তলটি তৌহিদ ৫ আগস্ট রাজধানীর ওয়ারি থানা থেকে লুট করেন এবং ইউটিউবে ভিডিও দেখে এটি চালানো শিখেছিলেন। শাহিদাকে হত্যার পর তৌহিদ পালানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু পুলিশ তাকে ভোলার মনপুরা দ্বীপে গ্রেপ্তার করে।
ডিবি পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, টিকটকের মাধ্যমে তৌহিদের সঙ্গে শাহিদার পরিচয় হয়। চার বছরের প্রেমের পর শাহিদা বিয়ের প্রস্তাব দিলে তৌহিদ তা অস্বীকার করেন। হত্যার দিন শাহিদাকে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে নিয়ে গিয়ে তৌহিদ তার ওপর পাঁচ রাউন্ড গুলি চালান। ঘটনা শেষে তৌহিদ পিস্তলটি কেরাণীগঞ্জে ফেলে পালিয়ে যান এবং মনপুরা দ্বীপে আত্মগোপন করেন। ডিবি পুলিশ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাকে আটক করতে সক্ষম হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, শাহিদার বিয়ের চাপ এবং তার আগের সম্পর্ক নিয়ে তৌহিদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব ছিল। ঘটনার দিন তৌহিদ শাহিদাকে ফোন করে ঘুরতে নিয়ে যান। রাতভর ঘোরাঘুরির পর ভোরে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়, যা হত্যাকাণ্ডে রূপ নেয়। হত্যার পর তৌহিদ কৌশলে মোবাইল ফোন বন্ধ রেখে বিভিন্ন স্থানে পালানোর চেষ্টা করেন। তবে, তার পরিবার ডিবি পুলিশের নজরদারিতে ছিল, যা গ্রেপ্তারে সহায়তা করে।
তৌহিদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্রটি ডোবা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র লুট এবং হত্যায় অস্ত্র ব্যবহারের পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তৌহিদ হত্যার পরিকল্পনা পূর্বেই করেছিল এবং হত্যার জন্য লুট করা সরকারি পিস্তল ব্যবহার করে।
নিহত শাহিদা রাজধানীর ওয়ারি এলাকার বাসিন্দা এবং ডে-কেয়ার কাজ করতেন। তার একটি আগের বিয়েও হয়েছিল, তবে তা টেকেনি। অপরদিকে, তৌহিদ ওয়ারি এলাকার বাসিন্দা এবং একটি অস্থায়ী চাকরি করতেন। মামলার তদন্ত চলছে, এবং আদালতে দেওয়া তৌহিদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post