ওয়াশিংটন, ০২ ডিসেম্বর – অস্ত্র ও শুল্ক মামলায় অভিযুক্ত হয়ে শাস্তির মুখোমুখি হওয়া ছেলে হান্টার বাইডেনকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমার ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
যদিও তিনি আগে অঙ্গীকার করেছিলেন যে, ছেলেকে ক্ষমার ক্ষেত্রে প্রেসিডেনশাল ক্ষমতা ব্যবহার করবেন না। কিন্তু বাইডেন তার কথা রাখতে পারলেন না।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার ছেলে হান্টারকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমা ঘোষণা করেছেন, যিনি দুটি ফৌজদারি মামলায় সাজার সম্মুখীন হয়েছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় রোববার (১ ডিসেম্বর) দেওয়া এক বিবৃতিতে মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির হয়ে নির্বাচিত এই প্রেসিডেন্ট তার ছেলেকে নিঃশর্ত ক্ষমার ঘোষণা দেন।
বিবিসির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সম্প্রতি নির্বাচন থেকে ছিটকে যাওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন দাবি করেন, শুধু পারিবারিক নামের কারণে অন্যায়ভাবে তার ছেলেকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। হান্টারকে ভেঙে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। এমনকি অব্যাহত আক্রমণ ও বিচারের মুখেও যিনি পাঁচ বছরের বেশি সময় নীরব ছিলেন।
বাইডেন বলেন, হান্টারকে আক্রমণের মাধ্যমে তারা আমাকেও দুর্বল করতে চেয়েছে। তাই যা হয়েছে তাই যথেষ্ট।
মার্কিন এই প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, যেদিন আমি (প্রেসিডেন্ট হিসেবে) দায়িত্ব গ্রহণ করি, সেদিন থেকেই আমি বলেছিলাম, আমি বিচার বিভাগের সিদ্ধান্ত গ্রহণে হস্তক্ষেপ করব না এবং আমি আমার কথা রেখেছি। যদিও আমি আমার ছেলেকে আলাদভাবে এবং অন্যায়ভাবে বিচারের সম্মুখীন হতে দেখেছি।
আন্তর্জাতিক দুই সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও রয়টার্স জানায়, হান্টার বাইডেন গত সেপ্টেম্বরের শুরুতে ট্যাক্স চার্জের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন এবং এর আগে গত জুন মাসে অবৈধ মাদক ব্যবহারকারী হওয়া সত্ত্বেও বন্দুক রাখার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন। এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে আগ্নেয়াস্ত্র-সংক্রান্ত এক মামলায় যুক্তরাষ্ট্রের ডেলাওয়্যারের একটি আদালতে হান্টারকে অভিযুক্ত করা হয়।
পৃথক প্রতিবেদনে বলা হয়, চাইলে যেকোনো অপরাধীকেই ক্ষমা করে দিতে পারেন প্রেসিডেন্ট। তবে বাইডেনের ঘোষণা করা এই ক্ষমা নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও প্রত্যাহার করতে পারবেন না।
প্রসঙ্গত, ৫৪ বছর বয়সী হান্টার বাইডেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দ্বিতীয় সন্তান। বাইডেনের প্রথম স্ত্রী নেইলি হান্টারের গর্ভে জন্মেছিলেন তিনি। ১৯৬৬ সালে জো বাইডেনের সঙ্গে বিয়ে হয় নেইলি হান্টারের। এই দম্পতির দুই ছেলে বিউ বাইডেন ও হান্টার বাইডেন এবং মেয়ে নাওমি বাইডেন। ১৯৭২ সালে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নেইলি হান্টার ও নাওমি বাইডেন নিহত হন। ২০১৫ সালে দুরারোগ্য ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান বাইডেন-নেইলির বড় সন্তান বিউ বাইডেনও। নেইলি হান্টারের মৃত্যুর ৫ বছর পর বর্তমান স্ত্রী ও মার্কিন ফার্স্টলেডি জিল ট্রেসি জ্যাকব বাইডেনকে বিয়ে করেন জো বাইডেন। এই দম্পতির একমাত্র মেয়ের নাম অ্যাশলে বাইডেন। আইনশাস্ত্রে ডিগ্রি নেওয়া হান্টার বাইডেন তার ক্যারিয়ারের প্রথম কয়েক বছর আইন ব্যাবসায় নিয়োজিত ছিলেন।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post