বিশ্বব্যাপী করোনার তাণ্ডব চলছে। দিন দিন আরও ভয়ংকর হয়ে উঠছে এ ভাইরাস। প্রতিদিনই দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল, আক্রান্তও হচ্ছে লাখে লাখে। মহামারি এ ভাইরাসের নতুন নতুন ধরন মানুষের মনে আতঙ্ক বাড়িয়ে দিয়েছে। করোনার টিকা আবিষ্কার হলেও এখনও আতঙ্কে বিশ্ববাসী। এদিকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানে গত কয়েকদিন যাবত আক্রান্ত কিছুটা নিম্নমুখী থাকলেও মৃতের সংখ্যা অপরিবর্তিত রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯-এপ্রিল) ওমান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুসারে দেশটিতে আজ নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ৯২৭ জন এবং মৃতের সংখ্যা ৯ জন। গতকালের তুলনায় আজ আক্রান্ত ১ জন কমলেও দেশটির হাসপাতালে আজ নতুন ভর্তি রোগীর সংখ্যা এবং আইসিইউতে ভর্তি রোগীর সংখ্যা শূন্যের কোঠায়।
বর্তমানে আইসিইউতে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২৭৫ জন। যা গতকালও ছিল এই সংখ্যা। এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৯৩ হাজার ২৫৩ জন। অপরদিকে মোট সুস্থের সংখ্যা ১ লাখ ৭৩ হাজার ১২৩ জন। আজ ৯ জনের মৃত সহ মোট মৃতের সংখ্যা ২ হাজার ১০ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন সুস্থের সংখ্যা ১২৭৫ জন। গতকালের চেয়ে আজ সুস্থের সংখ্যা বেড়েছে ৩৫৬ জন।
আজ দেশটির বিভিন্ন হাসপাতালে নতুন ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৯৬ জন। এখন পর্যন্ত দেশটির বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন ৮৩৩ জন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে ওমান সরকারের সকল নির্দেশনা মেনে চলতে নাগরিক এবং প্রবাসীদের অনুরোধ জানিয়েছে ওমান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। অন্যথায় আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুশিয়ারি দিয়েছে ওমান সুপ্রিম কমিটি।
এদিকে করোনা শনাক্ত ও মৃত্যুতে প্রতিদিনই রেকর্ড হচ্ছে ভারতে। ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই ভেঙে যাচ্ছে আগের রেকর্ড। অপর্যাপ্ত জরুরি পরিষেবা আরও বেশি মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে মনে করছে দেশটির সাধারণ মানুষ। আনন্দবাজার পত্রিকার এক খবরে বলা হয়, কমপক্ষে ২০ ঘণ্টা কেটে যাচ্ছে লাশ চিতায় তুলতে। শ্মশানে শ্মশানে ঘুরে সিরিয়াল না পেয়ে স্রেফ বরফ চাপা দিয়ে ৪৮ ঘণ্টারও বেশি সময় বাড়িতে লাশ রাখতে হচ্ছে। কুকুরের দেহ পোঁতার জায়গা ব্যবহার করা হচ্ছে মানুষকে দাহ করার জন্য। সৎকারের জন্য রাখা সারি সারি লাশে কুকুরকেও হামলা চালাতে দেখা গেছে।
ভারতের রাজধানী দিল্লির সুভাষনগরের শ্মশানে করোনায় মৃত বাবার মরদেহ নিয়ে গিয়েছিলেন বছর চল্লিশের মনমিত সিংহ। সংবাদমাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন, অ্যাম্বুলেন্স, গাড়ির ভিড় কাটিয়ে শ্মশানে ঢুকতে যাবেন, তার আগেই রাস্তা আটকালেন এক কর্মী। তিনি জানিয়ে দিলেন, আর দেহ নেওয়া যাবে না। কারণ দাহ করার জায়গা এবং কাঠ নেই। আর সিএনজি চুল্লিতে একসঙ্গে দু’টির বেশি দেহ করা যায় না। তাতেও এক একটি দেহের পিছনে কমপক্ষে ৯০ মিনিট সময় লাগবে। ইতোমধ্যেই লাইনে ২৪টি দেহ রয়েছে। তাই অন্য কোথাও যেতে হবে তাকে। এর পর পশ্চিম বিহার এলাকার একটি শ্মশানে গিয়ে বাবাকে দাহ করেন তিনি।
মনমিত বলেন, ‘সরকার হাসপাতালে অক্সিজেন দিতে পারছে না। অন্তত শ্মশানে জায়গা তো দিক, যাতে পৃথিবী থেকে বিদায়টা ঠিকমতো হয়!’ প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্যানুযায়ী, বুধবার (২৮ এপ্রিল) ভারতে ৩ লাখ ৭৯ হাজার ৪৫৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৩ হাজার ৬৪৭ জন। ভারতে করোনার ইতিহাসে এটিই সর্বোচ্চ আক্রান্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post