নাটোরে পানির দামে সরকারী গাছ বিক্রির মহোৎসব চলছে। মাত্র ২১৩ টাকা দরে ফলনশীল আম গাছ বিক্রি করা হচ্ছে। সরকারী রাস্তার দুইপাশ থেকে ৪৫ টি গাছ বিক্রি করা হয় মাত্র ৯৬০০ টাকায়। যা প্রতিটি গাছের মূল্য ২১৩ টাকা দরে বিক্রি করা হয়।
জানাগেছে, নাটোরে ফিলিং স্টেশন নির্মাণের অজুহাতে নাম মাত্র মূল্যে ৪৫টি গাছ বিক্রি করেছে বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। নিলাম টেন্ডারে অংশ গ্রহণকারী আমির আলি কার্যাদেশ পাওয়ার পরে লকডাউনের মধ্যেই তড়িঘড়ি করে গাছ কাটা শুরু করেছেন। বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ নাটোর অফিস সূত্রে জানা যায়, নাটোর সদর উপজেলার গাজীর বিলে এলপিজি ফিলিং স্টেশন নির্মাণ চলছে। এই অজুহাতে দাশুরিয়া হতে নাটোর মহাসড়কের পাশে ৯৬ কিলোমিটার পর্যন্ত ৪৫টি আম গাছ বিক্রির জন্য নিলাম আহ্বান করে। এ সংক্রান্ত তথ্য জানিয়ে গত ৩ মে আমীর আলী বরাবর গাছ কর্তনের কার্যাদেশ প্রেরণ করেন বরেন্দ্রর নাটোর জোনের সহকারী প্রকৌশলী আহসানুল করিম। প্রকৌশলীর মনোনীত প্রতিনিধির উপস্থিতিতে গাছ কাটার নির্দেশনা দেয়া হয়। তবে সকালে বরেন্দ্রর কোনো প্রতিনিধির উপস্থিতি ছাড়াই গাছ কাটা শুরু করেন আমীর আলী।
সচেতন মহলের পক্ষে নাটোর ইউনাইটেড প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বুলবুল আহমেদ বলেন, যদিও ফিলিং স্টেশনের কাছে কয়েকটি গাছ কাটলেই নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হতো। কিন্তু এই অজুহাতে নাটোর -পাবনা মহাসড়কের ৯৬ কিলোমিটার এলাকায় ৪৫টি গাছ বিক্রির কোন প্রয়োজন ছিলনা। এরফলে আর্থিক ক্ষতিসহ প্রকৃতির ভারসাম্যের ক্ষতি করা হয়েছে। এদিকে, এতো কম মূল্যে আম গাছগুলো বিক্রির ব্যাপারে বক্তব্য জানতে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নাটোর জোনাল কার্যালয়ে গিয়ে সহকারী প্রকৌশলীর দেখা পাওয়া যায়নি। একাধিকবার মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। তার খোঁজে অফিসে যাওয়া হলে অফিসের নিরাপত্তা কর্মী আবদুল বারেক জানান, এখন কেউ অফিস করেন না। তিনি নিজেই শুধু পাহারা দেন। গত দুই-তিনদিনে কেউ আসেননি। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোঃ শাহরিয়াজ বলেন, খুবই নগণ্য দামে গাছগুলো বিক্রির কথা শুনেছি। বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স্থানীয়রা জানান, এসব গাছের প্রতিটিতে আম ধরেছিল। ক’দিন আগেও গাছগুলোতে আমের থোকা ঝুলছিলো। কার্যাদেশ প্রাপ্তির পর তড়িঘড়ি করে ক্রেতা আমীর আলী আমগুলো সংগ্রহ করে গাছগুলো কাটা শুরু করেন। প্রতিটি গাছ থেকে প্রায় ১০ মণ খড়ি পাওয়া যাবে যার বাজার মূল্যই আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা। এভাবে গাছপ্রতি ন্যুনতম আড়াই হাজার থেকে ২৭০০ টাকা লোকসানে বিক্রি করেছে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। এতে সরকারের প্রায় ১ লাখ ১২ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে। নিলাম প্রক্রিয়ার ব্যাপারে একজন গণমাধ্যমকর্মী তার নিকটে জানতে চাইলে গাছের ক্রেতা আমীর আলীর রাগান্বিত হন। তিনি বলেন, ‘আমি যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে নিলামে নির্বাচিত হয়েছি। এর বেশী কিছু জানাতে আমি বাধ্য নই।
https://www.youtube.com/watch?v=_C6JICciFPM
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post