অফিসের বিভিন্ন কাজের জন্য বিভিন্ন সময়ে গুগল সার্চ করেন অনেকেই। তবে গুগলে অদ্ভুত বিষয় সার্চ করেই অফিসে ৫০ ঘণ্টা ব্যয় করেছেন যুক্তরাজ্যের ২৬ বছর বয়সী জশ উইলিয়ামস। জশের গুগল সার্চের তালিকায় ছিল—‘টার্কি দাঁত’ থেকে শুরু করে ‘সাইমন কাওয়েলের বিফল বোটক্স’। আর অফিসের বস এই কর্মকাণ্ড সম্পর্ক জানার পর স্বাভাবিকভাবেই চাকরিচ্যুত করলেন জশকে।
নিয়োগকর্তা দাবি করেন, কোম্পানির কর্মঘণ্টা ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার এবং অতিরিক্ত অসুস্থতার ছুটি নেওয়ায় জশকে বরখাস্ত করা হয়।
জশ উইলিয়ামস ‘গ্রাহক সেবা প্রশাসক’ পদে মাত্র তিন মাস ওই কোম্পানিতে কাজ করেন। এই অভ্যাসের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, মূলত পর্যাপ্ত কাজের অভাবের জন্য গুগল করার অভ্যাস তৈরি হয়েছে তাঁর।
তিনি বলেন, ‘আমার করার জন্য যথেষ্ট কাজ ছিল না, তাই আমি সাইমন কাওয়েলের বোটক্স এবং টার্কি দাঁতের মতো বিষয়গুলো গুগল করতে শুরু করি। তবে এই অভ্যাস নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেল।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে মিরর দাবি করছে, জশ উইলিয়ামস কেবল চাকরি হারাননি, বরং ঘটনার ওপর ভিত্তি করে আয় করার জন্য টিকটকে একটি ভিডিও পোস্ট করেন। তবে এই ভিডিও তাঁর জন্য নেতিবাচক ফল বয়ে আনে। ভিডিওটিতে তিনি মজার ছলে তাঁর বরখাস্তের কাহিনি শেয়ার করেছিলেন, যা দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়। তবে অনলাইনে এই ভিডিও ছাড়ার জন্য তাঁকে বিপদে পড়তে হয়েছে। কারণ নিয়োগকর্তারা ভিডিওটি দেখে ফেলেন। এ জন্য জশের তিনটি চাকরির আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়।
বিষয়টি নিয়ে টিকটকেও নেতিবাচক মন্তব্য করছে ব্যবহারকারীরা। কিছু টিকটক ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছিলেন, জশ উইলিয়ামস ‘বয়সে এত বড়’ হয়ে এ ধরনের ভুল করা উচিত নয়। আবার অন্যরা বলেন, ব্যক্তিগত সার্চের জন্য কেন অফিসের কম্পিউটার ব্যবহার করলেন? তিনি নিজের ফোনও ব্যবহার করতে পারতেন।
এসব সমালোচনা ও নেতিবাচক মন্তব্যের পর জশ অনুশোচনা করে বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমি সত্যিই লজ্জিত ও অনুতপ্ত।
এসব খারাপ পরিস্থিতির মধ্যেও ভিডিওটি প্রায় ৪৫০ পাউন্ড আয় করে, যা জশের বাসা ভাড়া দেওয়ার কাজে লাগে। আয়ের অভাব ও বিভিন্ন বিলের চাপের মধ্যে টিকটককে একটি সম্ভাব্য আয়ের উৎস হিসেবে দেখেছিলেন জশ। তবে এখন ভিডিওটি অনলাইনে রেখে দেওয়ার জন্য অনুশোচনায় ভুগছেন তিনি। জশ বলেন, ‘দুই দিন পর ভিডিওটি মুছে ফেলতে চেয়েছিলাম, কিন্তু টাকার জন্য এটি রেখে দিয়েছিলাম।
এখন খাদ্যশিল্পে সাপ্লাই চেইন সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করলেও জশ তাঁর বর্তমান চাকরি নিয়ে মোটেই সন্তুষ্ট নন। তিনি বলেন, ভাইরাল পোস্টটি তাঁকে অফিসভিত্তিক চাকরি ছাড়তে বাধ্য করেছে, কারণ এর ফলে সবাই তাঁকে চিনতে পারেন। জশ তাঁর গল্পটি অনলাইনে শেয়ার করার সিদ্ধান্ত নিয়ে অনুতাপ করছেন।
এখন তিনি একটি দীর্ঘমেয়াদি ক্যারিয়ার হিসেবে কনটেন্ট তৈরিতে মনোনিবেশ করছেন। কিন্তু তাঁর আগের ভিডিওটির প্রভাব এখনো তাঁকে ভোগাচ্ছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post