ফ্লাইট ওঠানামা এবং যাত্রী পরিবহনের পাশাপাশি রাজস্ব আদায়ে রেকর্ড গড়েছে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দর। তবে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে মধ্যপ্রাচ্যের ভিসা জটিলতায় প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা নিয়ে রয়েছে শঙ্কা।
গত ৬ মাসে এ বিমানবন্দর দিয়ে যাওয়া-আসা করেছেন ৫ লাখ মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী যাত্রী। কাঙ্ক্ষিত যাত্রী না পেলে আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থাগুলো ফ্লাইটের সংখ্যা কমিয়ে দিতে পারে বলে ট্রাভেল এজেন্টরা উদ্বিগ্ন।
এ বছরের জুন পর্যন্ত ৪ হাজার ২৯৩টি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে করে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের ৪ লাখ ৭৮ হাজার যাত্রী শাহ আমানত দিয়ে আসা-যাওয়া করেছেন।
এর বাইরে ৫ হাজার ১টি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের যাত্রী ছিল ৩ লাখ ৬ হাজার। আর সদ্য বিদায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ২৩৭ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন তসলিম আহমেদ বলেন, ‘ইউএস বাংলা ও বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটগুলো কিন্তু এখন শাহ আমানত থেকে মধ্যপ্রাচ্যে যাচ্ছে। তারা তাদের নরমাল ফ্লাইটের সংখ্যা আরও বাড়িয়েছে। আগে দিনে যেমন দুটো ছিল, এখন ৩-৪টি ফ্লাইট করে থাকেন।’
এদিকে, সাম্প্রতিক কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে নিয়ম-রীতি ভঙ্গ করে মিছিল করায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া শুরু হয়েছে।
এর মধ্যে সাময়িকভাবে ভিসা স্থগিত করেছে আরব আমিরাত। এর ফলে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দর দিয়ে যাত্রী সংখ্যা কমে যাওয়ার শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।
চট্টগ্রাম গালফ ট্র্যাভেলসের মালিক মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ‘আমরা একটু বেকায়দায় আছি। এভাবে যদি ভিসা বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে এয়ারলাইন্সগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। এরই মধ্যে ওমান এয়ার লাইন্স ও জাজিরা এয়ারলাইন্সসহ বেশ কয়েকটি এয়ারলাইন্স বন্ধ হয়ে গেছে। এভাবে ভিসা বন্ধ হয়ে গেলে এয়ারলাইন্স বন্ধ হয়ে যাওয়ার এ সংখ্যা আরও বাড়বে।’
বর্তমানে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমান বন্দরে বাংলাদেশ বিমান এবং ইউএস বাংলার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থা সালাম এয়ার, এয়ার এরাবিয়া ও ফ্লাই দুবাই মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক যাত্রী পরিবহন করছে।
এর মধ্যে আরব আমিরাতের যাত্রী তুলনামূলক বেশি। তাই মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক দেশগুলোর ভিসা জটিলতা দ্রুত নিরসনে সরকারের হস্তক্ষেপ চান আটাব নেতারা।
আটাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আবু জাফর বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কটা যদি সরকার আবার জোরদার করতে পারে, সম্ভবত আমিরাত আবার ভিসা খুলে দেবে।’
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক দেশগুলোর যাত্রী পরিবহনের জন্য আগেই স্লট নিয়ে রেখেছিলো আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থা সৌদি এয়ারলাইন্স, কাতার এয়ারওয়েজ, এমিরেটস, জাজিরা এয়ারলাইন্স এবং স্পাইস জেট। তবে, যাত্রী সংখ্যা কমে গেলে তারা ফ্লাইট পরিচালনা থেকে পিছিয়ে যেতে পারে বলে শঙ্কা ট্র্যাভেল এজেন্টদের।
চলতি বছরে বিমান ওঠানামা যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে যাত্রী আসা-যাওয়া। একই সঙ্গে বেড়েছে বিমানবন্দরের রাজস্ব আদায়। আর তিনটিতেই রেকর্ড গড়েছে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দর।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post