ছাত্র আন্দোলন সহিংসতায় রূপ নিলে নারায়ণগঞ্জে জেলা পাসপোর্ট অফিস পুড়িয়ে দেয় নাশকতাকারীরা। এতে পাসপোর্ট উঠানো, রিনিউসহ এ সংক্রান্ত বিভিন্ন সেবা পেতে বিপাকে পড়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। বিশেষ করে কর্মসংস্থান বা জরুরি চিকিৎসা সেবা নিতে যারা বিদেশ যেতে চান তাদের অনেকেই দীর্ঘ অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন গুনছেন।
এছাড়া পাসপোর্টের মেয়াদ না থাকায় বিদেশে স্বজনের কাছে যেতে পারছেন না অনেকে। তবে সেবা প্রত্যাশীদের ভোগান্তি লাঘবে বিশেষ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে করণীয় জানিয়েছে পাসপোর্ট অধিদপ্তর। তবে দ্রুতই জনভোগান্তি লাঘব করা সম্ভব হবে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছে পাসপোর্ট অধিদপ্তর (ডিআইপি-ডিপার্টমেন্ট অব ইমিগ্রেশন অ্যান্ড পাসপোর্ট)।
অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, শিগগিরই পুড়ে যাওয়া পাসপোর্ট পুনরায় প্রিন্ট করে সংশ্লিষ্টদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকদের নতুন করে আর কোনো অর্থ পরিশোধ করতে হবে না।
এছাড়া নারায়ণগঞ্জ অফিস বন্ধ থাকায় পার্শ্ববর্তী তিন জেলা থেকে পাসপোর্টসংক্রান্ত সব সেবা দেওয়ার ঘোষণা হয়েছে। এমনকি জরুরি প্রয়োজনে ঢাকার আগারগাঁওয়ে অবস্থিত প্রধান বিভাগীয় কার্যালয় থেকেও সেবা নেওয়া যাবে বলে জানিয়েছে ডিআইপি।
পাসপোর্ট অধিদপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নারায়ণগঞ্জ অফিস বন্ধ থাকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের পার্শ্ববর্তী কেরানীগঞ্জ, নরসিংদী ও মুন্সীগঞ্জ অফিস থেকে পাসপোর্ট সংক্রান্ত সব সেবা নিতে হবে। এ জন্য নরায়ণগঞ্জের ৭টি থানার অন্তর্গত আবেদনকারীদের পার্শ্ববর্তী কেরানীগঞ্জ, নরসিংদী ও মুন্সীগঞ্জে আবেদন করতে হবে।
এর মধ্যে ফতুল্লা ও নরায়ণগঞ্জ সদরের বাসিন্দরা কেরানীগঞ্জে আবেদন করবেন। এছাড়া সোনারগাঁ, রূপগঞ্জ ও আড়াইহাজারের বাসিন্দারা নরসিংদী এবং বন্দর ও সিদ্ধিরগঞ্জের অধিবাসীরা মুন্সীগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসে আবেদন জমা দিতে পারবেন।
তবে যাদের পাসপোর্ট তৈরি হয়েছিল কিন্তু বিতরণ করা হয়নি তারা আগারগাঁও বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিস থেকে তাদের পাসপোর্ট গ্রহণ করবেন। ভবন মেরামত করে নারায়ণগঞ্জ অফিস আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে অন্তত ৪ থেকে ৬ মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
এদিকে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে ৫ সদস্যদের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির আহ্বায়ক অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) শিহাব উদ্দিন খান। অন্য সদস্যরা হলেন, অধিদপ্তরের সিস্টেম অ্যানালিস্ট মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম ভূঁঞা, ই-পাসপোর্ট প্রকল্পের সহকারী পরিচালক মেজর ইমরাউল কায়েস ইমরুল, নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক গাজী মাহমুদুল হাসান ও সহকারী সিস্টেম অ্যানালিস্ট মোস্তাফিজুর রহমান। ৫ কর্মদিবসের মধ্যে তাদের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, কমিটির সদস্যরা ২৪ জুলাই সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ধ্বংসপ্রাপ্ত অফিসের ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম, কম্পিউটার ও আসবাবপত্র মিলিয়ে অন্তত ৮ কোটি টাকার ক্ষতি নিরূপণ করেন তারা। তবে চার তলা ভবনের কাঠামোগত ক্ষতি হিসাব করলে ক্ষয়ক্ষতির অঙ্ক ১০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post