একটি বা দুইটি নয় একেবারে ২০ টা বিয়ে। তাও আবার নয় বছরে। অবাক লাগলেও এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে ভারতের মহারাষ্ট্রে। সেখানে এক যুবক মহিলাদের প্রতারণা করে বিয়ে করে এবং বিয়ের কিছুদিন পরই টাকা-পয়সা ও গয়না নিয়ে পালিয়ে যেতেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়েছেন ধুরন্ধর সেই যুবক।
জানা গেছে, কিছুদিন আগে প্রতারিত নারীদের একজন নালাসোপাড়া থানায় অভিযোগ করলে ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২৩ জুলাই ওই যুবককে গ্রেফতার করেছে পালঘর পুলিশ।
অভিযোগে সেই নারী জানান, একটি ‘ম্যাট্রিমনি সাইটে’ ওই যুবকের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। অল্পদিনের আলাপেই তা গড়ায় প্রেমে। পরে বিয়েও হয় তাদের। ২০২৩ এর নভেম্বর মাস পর্যন্ত বিভিন্ন সময় ওই যুবককে প্রায় সাড়ে ছয় লাখ টাকা দেন তিনি। এছাড়া মূল্যবান জিনিসপত্রও দেন।
পুলিশের তদন্তে জানা যায়, ফিরোজ নিয়াজি শেখ নামে ওই যুবক বিভিন্ন সময় ২০ জনের বেশি নারীর টাকা ও মূল্যবান জিনিস চুরি করে পালিয়েছে সে। অনলাইনে বিভিন্ন নারীর সঙ্গে বন্ধুত্ব করতো ফিরোজ। এরপর তাদের বিয়ে করে মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে চম্পট দিতো সে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রতারিত নারীদের বেশিরভাগই বিধবা ছিলেন। বেছে বেছে বিধবাদের সঙ্গেই অনলাইনে বন্ধুত্ব করতেন ফিরোজ। তাদের বিশ্বাস অর্জনের পর বিয়ের কথা বলতেন। সুখে দিন কয়েক কাটত নব-দম্পতির। তারপর একদিন সুযোগ বুঝে মূল্যবান জিনিসপত্র হাতিয়ে চম্পট দিত ‘বর’!
জানা গেছে, মহারাষ্ট্র, দিল্লি, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, গুজরাটসহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন ফিরোজের স্ত্রীরা। ২০১৫ সাল থেকে ফিরোজ এই প্রতারণা করে আসছে।
তদন্ত শুরুর প্রথম দিকে পুলিশের কাছে ফিরোজের কোনো ছবি ছিল না। ঘন ঘন ফোন নম্বরও বদলাতো সে। পর নারী সেজে ভুয়া প্রোফাইল তৈরি করে ফিরোজের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। শুরু হয় বন্ধুত্ব ও কথোপকথন। একদিন তাকে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় দেখা করতে ডাকা হয়। এভাবেই পুলিশের ফাঁদে পা দেয় অপরাধী ফিরোজ।
পুলিশ তার কাছ থেকে একটি ল্যাপটপ, ছয়টি মোবাইল ফোন, প্রতারিত নারীদের ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড, চেকবই, নগদ ৩ লাখ টাকা এবং বেশকিছু মূল্যবান গয়না উদ্ধার করেছে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধারায় মামলা করা হয়েছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post