চট্টগ্রামে পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যা বেশি। বিবাহিতের হারেও পুরুষের চেয়ে এগিয়ে নারীরা। ৬৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ বিবাহিত নারীর বিপরীতে বিবাহিত পুরুষ রয়েছেন ৫৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
আর ২৬ দশমিক ৫২ শতাংশ অবিবাহিত নারীর বিপরীতে অবিবাহিত পুরুষের হার ৪২ দশমিক ৪৩ শতাংশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২-এর জেলা রিপোর্ট প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে জানানো হয়, ২০২২ সালের ১৪ জুন পর্যন্ত চট্টগ্রামে জনসংখ্যা ছিল ৯১ লাখ ৬৯ হাজার ৪৬৫ জন। এরমধ্যে পল্লী অঞ্চলে ৪২ লাখ ৮৪ হাজার ২৪৯ জন এবং শহর অঞ্চলে ৪৮ লাখ ৮৫ হাজার ২১৬ জন। ১০ বছর আগে ২০১১ সালে চট্টগ্রামে জনসংখ্যা ছিল ৭৬ লাখ ১৬ হাজার জন। সে হিসেবে ১০ বছরে জেলায় জনসংখ্যা বেড়েছে ১৫ লাখ ৫৩ হাজার।
চট্টগ্রামে প্রতি বর্গকিলোমিটারে বাস করেন এক হাজার ৭৩৬ জন। ২০১১ সালে যে সংখ্যা ছিল এক হাজার ৪৪২। জেলায় জনসংখ্যার বার্ষিক গড় বৃদ্ধির হার এক দশমিক ৬৫ শতাংশ। যেটি ২০১১ সালে ছিল এক দশমিক ৪০ শতাংশ।
চট্টগ্রামে মোট জনসংখ্যার ৮৭ দশমিক ৫৩ শতাংশ মুসলিম। এছাড়া বাকি জনসংখ্যার ১০ দশমিক ৭২ শতাংশ হিন্দু, এক দশমিক ৬৩ শতাংশ বৌদ্ধ, শূন্য দশমিক শূন্য নয় শতাংশ খ্রিস্টান এবং শূন্য দশমিক শূন্য তিন শতাংশ অন্যান্য ধর্মাবলম্বী বলে জানানো হয়।
এছাড়া জেলায় অবিবাহিত নারীর চেয়ে পুরুষের সংখ্যা বেশি। ২৬ দশমিক ৫২ শতাংশ অবিবাহিত নারীর বিপরীতে অবিবাহিত পুরুষের হার ৪২ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
জেলায় পুরুষের চেয়ে বেশি নারীর সংখ্যা। প্রতি ১০০ জন নারীর অনুপাতে পুরুষের সংখ্যা ৯৯ দশমিক ৩৭ শতাংশ। জেলায় পুরুষের সংখ্যা ৪৫ লাখ ৭০ হাজার ১১৩ এবং নারীর সংখ্যা ৪৫ লাখ ৯৮ হাজার ৯২৬ জন। সে হিসেবে নারী ২৮ হাজার ৮১৩ জন বেশি।
জেলায় বিবাহিত নারী ৬৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ, বিবাহিত পুরুষ ৫৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ, বিধবা আট দশমিক ৯৯ শতাংশ, বিপত্নীক শূন্য দশমিক ৭৯ শতাংশ, তালাকপ্রাপ্ত নারী শূন্য দশমিক ৪২ শতাংশ, তালাকপ্রাপ্ত পুরুষ শূন্য দশমিক শূন্য নয় শতাংশ, দাম্পত্য বিচ্ছিন্ন নারী শূন্য দশমিক ৫২ শতাংশ এবং পুরুষ শূন্য দশমিক ১৩ শতাংশ।
উপজেলা পর্যায়ে সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যা ফটিকছড়িতে। এ উপজেলায় মোট জনসংখ্যা ছয় লাখ ৪২ হাজার ৭৬ জন। এছাড়া বাঁশখালীতে পাঁচ লাখ ৩৭ হাজার ৫৫৫ জন, সীতাকুণ্ডে চার লাখ ৫৭ হাজার ৩৬৮ জন, হাটহাজারীতে চার লাখ ৯৮ হাজার ১৭৯ জন, সাতকানিয়ায় চার লাখ ৫৪ হাজার ৫১ জন, মীরসরাইয়ে চার লাখ ৭২ হাজার ৭৭৭ জন, আনোয়ারায় তিন লাখ ১৯ হাজার ৪৮২ জন, লোহাগাড়ায় তিন লাখ ২৮ হাজার ২০৬ জন, পটিয়ায় তিন লাখ ৯৭ হাজার ৬৭২ জন, রাঙ্গুনিয়ায় তিন লাখ ৯২ হাজার ৮৯৮ জন, রাউজানে তিন লাখ ৯৬ হাজার ৩৫০ জন, সন্দ্বীপে তিন লাখ ২৭ হাজার ৫৫৩ জন, বোয়ালখালীতে দুই লাখ ৫৮ হাজার ৬৭৫ জন, চন্দনাইশে দুই লাখ ৫২ হাজার ২৩৮ জন এবং কর্ণফুলীতে দুই লাখ ৩ হাজার ৬৯৭ জন।
চট্টগ্রামে সাক্ষরতার হার ৮১ দশমিক শূন্য ছয় শতাংশ। এরমধ্যে নারী ৭৯ দশমিক ২৬ শতাংশ এবং পুরুষ ৮২ দশমিক ৮৮ শতাংশ। জেলায় ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী জনসংখ্যার প্রায় ৩০ দশমিক ৩৮ শতাংশ তরুণ-তরুণী পড়ালেখা, কাজ বা কোনো ট্রেনিং কার্যক্রমে যুক্ত নেই। এরমধ্যে নারীর সংখ্যা ৪৬ দশমিক ৬২ শতাংশ এবং পুরুষের সংখ্যা ১২ দশমিক ১৬ শতাংশ।
চট্টগ্রামে কমেছে কৃষিনির্ভর পেশার পরিমাণ। জেলায় কৃষিক্ষেত্রে কাজ করা জনসংখ্যার পরিমাণ ১৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এছাড়া শিল্পখাতে জড়িত ২৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ এবং সেবাখাতে ৫৩ দশমিক ৮০ শতাংশ।
১৫ বছরের ঊর্ধ্বে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৭৭ দশমিক শূন্য সাত শতাংশ। এরমধ্যে নারী ৬৮ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং পুরুষ ৮৫ দশমিক ৯৮ শতাংশ। অন্যদিকে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন ৫০ দশমিক ৮২ শতাংশ। এরমধ্যে নারী ৪২ দশমিক ৪৩ শতাংশ এবং পুরুষ ৫৯ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, পরিসংখ্যান ব্যুরো যে তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করেছে, তা জেলার বিভিন্ন উন্নয়নে কাজে লাগবে।
বিশেষ করে স্যানিটেশন, জ্বালানিসহ বিভিন্ন বিষয়ে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। চট্টগ্রামে এখনো এক দশমিক ৪৯ শতাংশ মানুষ কাঁচা/খোলা টয়লেট ব্যবহার করেন।
এটিকে কীভাবে শূন্যে নামিয়ে আনা যায়, তা নিয়ে কাজ করার জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগকে অনুরোধ করছি। অনুষ্ঠানে সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি এবং গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post