কানাডায় বিদেশিদের বাড়ি তথা আবাসিক স্থাপনার মালিকানা কেনার ওপর জারি থাকা নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ আরও দুই বছরের জন্য বাড়ানো হচ্ছে। আবাসন সংকটে থাকা স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য বাড়িঘর সহজলভ্য করতে এবং বাড়ির আকাশছোঁয়া দাম কিছুটা নাগালের মধ্যে আনতে এই পদক্ষেপ নিচ্ছে দেশটি।
এর আগে গত বছরের জানুয়ারিতে কানাডায় বিদেশিদের বাড়ি কেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়। সর্বশেষ পদক্ষেপে সেই নিষেধাজ্ঞাই আরও দুই বছরের জন্য বাড়ানো হবে। রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কানাডিয়ান আবাসনে বিদেশি মালিকানার ওপর নিষেধাজ্ঞা ররিবার আরও দুই বছরের জন্য বর্ধিতকরণের ঘোষণা দিয়েছে কানাডা। দেশটি বলেছে, দেশজুড়ে নগর ও শহরে হাউজিং মার্কেটে আকাশছোঁয়া দামের বিষয়ে কানাডিয়ানদের উদ্বেগ দূর করার উদ্দেশেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
রয়টার্স জানাচ্ছে, তীব্র চাহিদার কারণে আবাসন ক্রয়ক্ষমতার সংকটের মুখোমুখি হয়েছে কানাডা। আর এর জন্য অভিবাসী এবং বিদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যার বৃদ্ধিকে দায়ী করা হয়েছে। মূলত ক্রমবর্ধমান খরচ যেমন বাড়ি নির্মাণকে ধীর করে দিয়েছে ঠিক তেমনিভাবে বাড়ির চাহিদাও অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছে।
কানাডার উপ-প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘কানাডিয়ানদের জন্য আবাসন আরও সাশ্রয়ী করতে কানাডিয়ান আবাসনে বিদেশি মালিকানার ওপর চলমান নিষেধাজ্ঞা – যা ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি মেয়াদ শেষ হতে চলেছে – আগামী ২০২৭ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হবে।’
কানাডিয়ান সরকার বলেছে, দেশজুড়ে বিভিন্ন নগর ও শহরে হাউজিং মার্কেটে আকাশছোঁয়া দামের পাশাপাশি বিদেশি মালিকানার বিষয়টি কানাডিয়ানদের উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে। এর আগে গত মাসে রেকর্ড সংখ্যক অভিবাসীর আগমন এবং তার জেরে দিন দিন আবাসন সংকট তীব্র হতে থাকায় বিদেশি শিক্ষার্থীদের প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপের কথা জানায় কানাডা।
কানাডার অভিবাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে সেসময় জানা যায়, চলতি ২০২৪ সালে সর্বোচ্চ ৩ লাখ ৬০ হাজার শিক্ষার্থীকে প্রবেশ অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে যত সংখ্যক বিদেশি শিক্ষার্থীকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, শতকরা হিসেবে এই সংখ্যা তার চেয়ে ৩৫ শতাংশ কম।
এমনকি স্নাতক শেষ করার পরে কিছু শিক্ষার্থীকে ওয়ার্ক পারমিট দেওয়া বন্ধ করবে কানাডা। কারণ আবাসন সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলছে এমন রেকর্ড সংখ্যক নবাগতদের লাগাম টানতে চায় উত্তর আমেরিকার এই দেশটি।
এছাড়া অভিবাসনের কারণে দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়াই সেটি স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষার মতো পরিষেবার ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে এবং একইসঙ্গে আবাসন খরচ বাড়াতেও সাহায্য করেছে। এই বিষয়গুলো লিবারেল প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সমর্থনে ভাটার সৃষ্টি করেছে। জনমত জরিপগুলোতে দেখা যাচ্ছে, কানাডায় এখন নির্বাচন হলে তাতে হেরে যাবেন জাস্টিন ট্রুডো।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post