বঙ্গোপসাগরে ফের একটি ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি ক্রমে শক্তিশালী হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) সকাল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে বলে আবহাওয়াবিদরা পূর্বাভাস দিয়েছেন।
একই সঙ্গে এটি বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলেও জানিয়েছেন তারা। গত মাসে (অক্টোবর) বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ এর সৃষ্টি হয়। এটি গত ২৪ অক্টোবর কুতুবদিয়ার কাছ দিয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সকালে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আগামীকাল (শুক্রবার) ভোর নাগাদ গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। এটি উত্তর ও উত্তর-পূর্বে বাংলাদেশের দিকেই এগোচ্ছে। এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী এটি শনিবার (১৮ নভেম্বর) শেষ রাত থেকে সকাল নাগাদ বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে। তবে এটি কখন আঘাত হানবে তা এর বডির গতির ওপর নির্ভর করে।’
এটি খুলনা ও বরিশালের মাঝখান দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, তবে এটি যে কোন সময় গতিপথ পরিবর্তনও করতে পারে। ‘এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে এর নাম হবে মিধিলি। এটি একটি সাধারণ সাইক্লোন হবে। এটি খুব দ্রুত ঘনীভূত হয়েছে। অল্পসময়ের মধ্যে লঘুচাপ থেকে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এবং এটি এগোনোর গতিও বেশি। শুক্রবার সকালের মধ্যে এটি ঘূর্ণিঝড়ের পরিণত হলে, পরবর্তী ১৮ ঘণ্টার মধ্যে তা উপকূল অতিক্রম করতে পারে।’
আজিজুর রহমান বলেন, ‘গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে সতর্ক সংকেত বাড়বে। সংকেত বেড়ে পাঁচ, ছয়, সাত পর্যন্ত যেতে পারে।’ আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেসা বলেন, ‘গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেবে, আপাতত আমরা সেটি দেখতে পাচ্ছি। কারণ এটি আরও ঘনীভূত হবে। এ বিষয়ে তথ্য বিশ্লেষণ চলছে, দুপুরের পর অনেক কিছু স্পষ্ট হয়ে যাবে।’
অন্যদিকে, ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, গভীর নিম্নচাপটি আরও ঘনীভূত হয়ে শুক্রবার সকাল নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। এটি উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে এগিয়ে শনিবার ভোর নাগাদ এটি বাংলাদেশের মোংলা এবং খেপুপাড়ার মধ্যদিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। উপকূল অতিক্রমের সময় এর গতি থাকতে পারে ৫৫ থেকে ৬৫ কিলোমিটার, যা ঝোড়ো হওয়ার আকারে সর্বোচ্চ ৭৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে।
গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে এর নাম হবে ‘মিধিলি’। নামটি মালদ্বীপের দেওয়া, যার অর্থ ‘ফলপ্রসূ কোন বিষয়’ বলে জানান একজন আবহাওয়াবিদ।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (ডব্লিউএমও) অধীন জাতিসংঘের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাগর তীরের ১৩ দেশের (বাংলাদেশ, মিয়ানমার, ভারত, পাকিস্তান, মালদ্বীপ, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, ওমান, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান, সৌদি আরব ও ইয়েমেন) আবহাওয়াবিদদের সংস্থা এস্কেপ ঘূর্ণিঝড়ের নাম দিয়ে থাকে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post