পাসপোর্ট করতে আগের মতো নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে না মানুষজনকে। অনলাইন আবেদন শুরু হওয়ার পর ঘরে বসে আবেদন ও ফি জমা দেওয়া যাচ্ছে। তবে অনলাইনে আবেদনের ক্ষেত্রে অনেকেই নানা কারণে কিছু ভুল করে ফেলেন। বিশেষত যারা নতুন আবেদন করছেন তাদের ক্ষেত্রে ভুল হয়ে থাকে বেশি। তবে এসব ভুলে খুব সহজেই সংশোধন করা সম্ভব।
ই-পাসপোর্ট আবেদনের জন্য আবেদনকারীকে প্রথমে সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইট গিয়ে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে। এই অ্যাকাউন্টে আবেদনকারীর সব তথ্য সংরক্ষিত থাকে। চূড়ান্তভাবে অনলাইন আবেদনটি সাবমিট করার আগ পর্যন্ত আবেদনকারী কোনো ভুল থাকলে সেটা যতবার ইচ্ছা পরিবর্তন করতে পারবেন।
তবে আবেদনটি একবার সাবমিট হয়ে গেলে কোনো ভুল ধরা পড়লেও তা আগের মতো পরিবর্তন করা সম্ভব হয় না। সেক্ষেত্রে সংশোধনের জন্য আবেদনকারীকে তার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে উপস্থিত হতে হবে।
যেভাবে ভুল সংশোধন করতে পারবেন পাসপোর্টের। অনলাইনে আবেদন করার পর সেটি ডাউনলোড করে যদি দেখেন কোনো ভুল আছে, তাহলে দুটি পদ্ধতি গ্রহণ করতে পারেন।
প্রথমটি হচ্ছে, যদি দেখেন আপনার ই-পাসপোর্টের আবেদনপত্রে ছোট দুএকটি ভুল আছে তাহলে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে সেখানকার কম্পিউটার অপারেটরকে অনুরোধ করলে সংশোধন করে দেবে। যদি বড় ভুল হয়ে থাকে তাহলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে আবেদন জমা নেয় না পাসপোর্ট অফিস। সেক্ষেত্রে দ্বিতীয় পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে।
দ্বিতীয় পদ্ধতি অনুযায়ী, পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তাকে অনুরোধ করে দেখা যেতে পারে। যদি তিনি সংশোধন করে দেন তাহলে ভালো। আর তা না হলে শেষ উপায় হচ্ছে আবেদনপত্র বাতিল করা। আবার নতুন করে আবেদন ফরম পূরণ করা।
কোনো আবেদনকারী যদি তার ই-পাসপোর্টের অনলাইন আবেদনটি বাতিল করতে চান তাহলে তাকে প্রথমে পাসপোর্ট অফিসের সহকারী উপ-পরিচালক বরাবর দরখাস্ত দিতে হবে। এই দরখাস্তে প্রথমে নিজের নাম ও মা-বাবার নামের পর আবেদনের তারিখ উল্লেখ করতে হবে।
তারপর দিতে হবে অনলাইনে নিবন্ধিত আবেদনের আইডি নম্বর। এটি পাওয়া যাবে আবেদনের পর অ্যাপ্লিকেশন সামারিতে, যার শুরু হয়েছে OID দিয়ে।
এরপর দরখাস্তে অনলাইন আবেদনের যে অংশ ভুল হয়েছে সেটি উল্লেখ করতে হবে। সর্বশেষ দরখাস্তের সঙ্গে অনলাইন আবেদনের অ্যাপ্লিকেশন সামারির প্রিন্ট করা কপিটি সংযুক্ত করে দিতে হবে। তারপর এই দরখাস্ত আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস গিয়ে জমা দিয়ে আসতে হবে।
আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে ই-পাসপোর্টের আবেদন বাতিল করতে দরখাস্ত জমা দেওয়ার পর আবেদনকারীর মোবাইল নম্বরে এ সংক্রান্ত একটি এসএমএস চলে আসবে। এসএমএস আসার পর আবেদনকারী সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটে গিয়ে নিজের অ্যাকাউন্টে লগইন করবেন।
তখন অ্যাকাউন্টে আবেদনের অংশে লাল অক্ষরে স্ট্যাটাস ক্যানসেল দেখাবে। এরপর থাকবে ডিলিট অপশন। ডিলিট অপশনে ক্লিক করার পর আবেদনটি বাতিল হয়ে যাবে। এরপর সঠিক তথ্য দিয়ে নতুন করে আবার ই-পাসপোর্টের জন্য অনলাইন আবেদন করা যাবে।
তবে আবেদনটি বাতিল হতে ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় লাগতে পারে। আবেদনটি বাতিল হওয়া না পর্যন্ত নতুন আবেদন করা যাবে না। তাই সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটের চেক স্ট্যাটাস মেন্যুতে গিয়ে বার বার চেক করতে হবে আবেদন বাতিল হয়েছে কি না। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে অনেক সময় ৩-৭ দিনও সময় লেগে যায়।
ই-পাসপোর্টের অনলাইন আবেদনের ক্ষেত্রে ছয় মাসের মধ্যে আবেদন ফি বা টাকা জমা দিতে হবে। এই ৬ মাসের মধ্যে আবেদন ফি ও আঙুলের ছাপ এবং ছবি তোলা না হলে আবেদনটি এমনিতেই বাতিল হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে ৬ মাস পর আবার নতুন করে আবেদন করা যাবে।
ফি পরিশোধের পর আবেদনে ভুল ধরা পড়লে যা করবেন ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন ও টাকা জমা দেওয়ার পর ভুল ধরা পড়লে আগের নিয়মে দরখাস্ত করে আবেদন বাতিল করতে হবে। তবে দরখাস্তের সঙ্গে আবেদন ফি বাতিল হয়ে যাবে না। নতুন আবেদনের সঙ্গে আগের জমা দেওয়া টাকার ব্যাংক রশিদ কিংবা চালান জমা দিতে পারবেন।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post