টাকি মাছ ধরতে গিয়ে, গর্তের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে দিয়েছিলাম l কিন্তু ওই গর্তের মধ্যে সাপ বিশ্রামে আছে জানতাম না। আমারতো জানারও কথা না, কারণ সাপরা তো আর মানুষকে বলে-কয়ে বিশ্রাম নেয় না l যাই হোক, উনি প্রথমে আমার হাতের আঙ্গুলে চুমা দিয়েই, কামড় মেরে দিলেন l কালবিলম্ব না করে আমি হাত বাহির করে এনে দেখি, একটি কালচে হলুদ রঙের সাপ, আঙ্গুলে কামড় মেরে ঝুলে আছে l বেশি বড় না, বাচ্চা সাপl জোরে চিৎকার দিয়ে গায়ের সমস্ত শক্তি দিয়ে হাত ঝাঁকি মারতেই সাপটি ছেড়ে দিয়ে চলে গেলl পৃথিবীর সবচাইতে সুস্বাদু বি+ পজিটিভ রক্ত বের হতে লাগলোl আঙ্গুলটি ধুয়ে মুখের মধ্যে সিনেমার কায়দায় রক্ত চুষতে লাগলামl একজন বন্ধু দুবলা ঘাস মুখের মধ্যে দিয়ে চিবিয়ে আমার হাতের আঙ্গুলটি লাগিয়ে দিলl আর একজন কচু গাছের ডগার রস চিপে ক্ষতস্থানে দিতে লাগলো l
একজন বলল তোমাকে তো সাপুড়ের কাছে যেতে হবে, না হয় তুমি মারা যাবাl আর একজন বলল এটা দোরা সাপের বিষ নাইl একটু সাহস পেয়ে জিজ্ঞেস করলাম তুমি কি করে জান ওর বিষ নাই? ও জানালো, অনেক কাল আগে এই দোরা সাপেরই সবচাইতে বেশি বিষ ছিল, কিন্তু গোখরা সাপ ওর সব বিষ চুরি করে নিয়েছে, কোন এক পূর্ণিমার রাতেl বাড়িতে ফিরে কিচ্ছু ভাল লাগছে না, খেতেও ইচ্ছা করছে না, শরীরে জ্বর জ্বর ভাবl চিন্তা করলাম মরে যাব, তাও ভালো কিন্তু বাড়িতে গিয়ে বলা যাবে না, এটাই ফাইনালl মার খাওয়ার চেয়ে মরে যাওয়াই অনেক ভালোl এখন যেমন মরে যাবো, কিন্তু কাউকে জানানো যাবেনা করোনাভাইরাস এ সংক্রামক হয়েছেl পরিবারের লোকেরা মনে করছে , কিভাবে মুখ দেখাবো এই সমাজে? ভাইরাসের সংক্রমণের লজ্জার চাইতে মরে যাওয়া ভালো।
আরও পড়ুনঃ ওমানের টুরিস্ট ভিসার মেয়াদ বাড়লো
ফিরে আসি আমার গল্পতে, তখন প্রায় প্রত্যেক বাড়িতেই প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য গোল চ্যাপ্টা টিনের কৌটাতে সবুজ কালারের জাম্বাক মলম পাওয়া যেত, মলম লাগালামl জ্বর আস্তে আস্তে বাড়তে লাগলোl সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত নেমে এলোl ভাবলাম রাতেই মারা যাবোl আইতাল কুরসি ও যতগুলো সূরা জানা ছিল সমস্ত সুরা পড়ে তওবা করে শোয়ার দোয়া পড়ে ঘুমিয়ে গেলামl এটাই আমার শেষ রজনীl সকালে সবাই আমাকে মৃত দেখবে! পরেরদিন সকালে হঠাত কে যেন চিৎকার করে ডাকছে এই ওঠl প্রাইভেট স্যারের কাছে পড়তে যাবি না? সেই দিন ওই মৃত্যুর দুয়ার ছুঁয়ে আজো বেঁচে আছি।
লেখকঃ ইঞ্জিনিয়ার গোলাম রব, কাসাব, ওমান।
আরও দেখুনঃ ওমানে বাংলাদেশ দূতাবাসের সামনে প্রবাসীদের বিক্ষোভ কেনো?
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post