ইসরায়েলি বিমান বাহিনী গাজার উপর এক ব্যাপক ও তীব্র বিমান হামলা চালিয়েছে, যার ফলে তিন শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। নিহতদের মধ্যে বহু নারী ও শিশু রয়েছে। ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ) জানিয়েছে যে তারা হামাসের ‘সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তুগুলোতে’ আঘাত হেনেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হামাসের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা মাহমুদ আবু ওয়াফা এই হামলায় নিহত হয়েছেন।
গত ১৯ জানুয়ারি থেকে একটি বিরতির পর গাজার উপর এটি ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় বিমান হামলা। আজ মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) গাজায় যখন বেশিরভাগ মানুষ পবিত্র রমজান মাসের সেহরির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল, ঠিক তখনই আকস্মিকভাবে এই বোমা হামলা শুরু হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ২০টিরও বেশি ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান গাজার আকাশে চক্কর দিচ্ছিল এবং সেগুলো গাজা সিটি, রাফাহ ও খান ইউনিসের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এই হামলার পূর্বে অনুমোদন দিয়েছিলেন। তারা বলেছেন, হামাসের কাছ থেকে বন্দিদের মুক্তি এবং পূর্বে প্রস্তাবিত চুক্তি প্রত্যাখ্যানের প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল এই পদক্ষেপ নিয়েছে। তারা ভবিষ্যতে হামাসের বিরুদ্ধে আরও কঠোর সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন।
অন্যদিকে, হামাস এই হামলাকে বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। সংগঠনটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে ইসরায়েল তাদের চুক্তি ভঙ্গ করেছে এবং এর ফলে বন্দি ইসরায়েলি সেনাদের ভবিষ্যৎ আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে।
বিমান হামলা শুরুর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ইসরায়েলকে এই হামলার বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছিল। এমনকি ওয়াশিংটন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীকে সহায়তা করার জন্য প্রস্তুত ছিল বলেও জানা যায়।
এদিকে, গাজার পরিস্থিতি ক্রমশ অবনতির দিকে যাচ্ছে। ৭ অক্টোবর ২০২৩ থেকে শুরু হওয়া সংঘাতের পর থেকে এ পর্যন্ত ৪৮ হাজার ৫২০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে অধিকাংশই নিরীহ বেসামরিক নাগরিক।
গাজার প্রায় ২১ লক্ষ মানুষ, যাদের অধিকাংশই একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে, এবং শহরের প্রায় ৭০ শতাংশ ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে। শুধু তাই নয়, গাজার স্বাস্থ্য, পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পড়েছে এবং খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।

Discussion about this post