অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠকে তিনি ডিসেম্বরের নির্বাচনের আগেই প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজ সম্পন্ন করার ওপর জোর দেন। পুলিশের ঊর্ধ্বতন ১২৭ কর্মকর্তা এ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
ড. ইউনূস বলেন, “ইতোমধ্যে আমরা সাত মাস পার করেছি। আমরা বলছি, ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে। কাজেই কী কী সংস্কার করতে চাই, করে ফেলতে হবে। কারও জন্য অপেক্ষা করে কোনো লাভ হবে না। কাজটা করতে হবে এবং সেটা আমাদের প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।” তিনি আরও যোগ করেন, “ভবিষ্যতে যে সরকার নির্বাচিত হবে, সেটি হবে আইনের শাসনের সরকার। পুলিশকে সে অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করতে হবে।”
ড. ইউনূস পুলিশ বাহিনীর ভূমিকার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “দেশ বদলাতে হলে একক নির্দেশে নয়, বরং সবাইকে নিয়ে এক একটি টিম হয়ে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশে যত টিম আছে, তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ টিম হলো পুলিশ।” তিনি আরও বলেন, “সরকার যা কিছুই করতে চায়, শেষ পর্যন্ত পুলিশের হাত দিয়েই করতে হয়। তবে তারা সব করে দেয় না, তারা পরিবেশটা সৃষ্টি করে। যে পরিবেশটা না থাকলে কোনো কাজই আর হয় না।”
প্রধান উপদেষ্টা পুলিশের ভূমিকাকে আরও স্পষ্ট করে বলেন, “পুলিশের কথা প্রসঙ্গে বারবার আমরা দুটো শব্দ বলছি- আইন ও শৃঙ্খলা। পুলিশের হাতেই এটাকে এক্সিকিউট করতে হবে। এই পরিবেশ সৃষ্টি করা না গেলে সরকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, মানুষের অধিকার, নাগরিকের অধিকার-কিছুই থাকে না।” তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, “আইন-শৃঙ্খলা না থাকলে যত বড় বড় চিন্তাই হোক, যত টাকাই থাকুক, কোনো কাজে আসবে না।”
ড. ইউনূস পুলিশ বাহিনীর অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, “আমরা পুলিশকে অবহেলা করে দেশ গড়তে পারব না। তারাই সম্মুখসারির মানুষ। তারা ক্ষেত্র প্রস্তুত করলেই বাকি জিনিসগুলো হয়।” তিনি পুলিশের সক্ষমতা বাড়ানোর ওপরও জোর দেন এবং বলেছেন, “পুলিশের হাতেই আইন-শৃঙ্খলা নিশ্চিত করার দায়িত্ব। তাদের সঠিকভাবে কাজ করতে পারলেই দেশের উন্নয়ন সম্ভব।”
সভায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গনি এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বক্তব্য দেন। এছাড়াও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আহসান হাবিব পলাশ এবং রাজশাহীর পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলাম বক্তব্য রাখেন।
ড. ইউনূসের এই বৈঠকটি আগামী নির্বাচন ও দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের প্রস্তুতি এবং পুলিশ বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।

Discussion about this post