চীন, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের পর এবার বাংলাদেশেও হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাস (এইচএমপি) শনাক্ত হয়েছে। এ সংক্রমণ ঠেকাতে এবং জনসাধারণকে সচেতন করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বেশ কয়েকটি নির্দেশনা জারি করেছে।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) জানিয়েছে, ঢাকার মহাখালী সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে একজন রোগীর শরীরে এই ভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। রোগী বর্তমানে চিকিৎসাধীন।
এইচএমপি ভাইরাসের প্রভাব ও ঝুঁকি:
এই ভাইরাস সাধারণত শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ ঘটায়, যা ফ্লুয়ের মতো উপসর্গ সৃষ্টি করে। আক্রান্তদের মধ্যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে লক্ষণ ২-৫ দিনের মধ্যে সেরে যায়। তবে বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ধরা হচ্ছে—
>> ১৪ বছরের কম বয়সী শিশু।
>> ৬৫ বছরের বেশি বয়স্ক ব্যক্তি।
>> হাঁপানি, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (সিওপিডি) বা দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্য সমস্যায় ভোগা রোগী।
>> গর্ভবতী নারী।
>> দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তি।
চীনসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে এই ভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশেও তা নিয়ন্ত্রণে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা:
এইচএমপি ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনাগুলো হলো:
>> শীতকালীন শ্বাসতন্ত্রের রোগ প্রতিরোধে মাস্ক ব্যবহার করুন।
>> হাঁচি-কাশির সময় টিস্যু বা বাহু দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখুন।
>> ব্যবহৃত টিস্যু দ্রুত ঢাকনাযুক্ত ময়লার ঝুড়িতে ফেলুন।
>> হাত ধোয়ার জন্য হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা সাবান-পানি ব্যবহার করুন (অন্তত ২০ সেকেন্ড)।
>> আক্রান্ত ব্যক্তির কাছ থেকে অন্তত তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখুন।
>> অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন।
>> জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট থাকলে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত ঘরে থাকুন।
চিকিৎসা কেন্দ্র ও বন্দরগুলোর জন্য নির্দেশনা:
দেশের সব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সিভিল সার্জন, জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তাসহ বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের এই ভাইরাস প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরামর্শ:
এই ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। সচেতনতা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। দেশের জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এইচএমপি ভাইরাসের মতো রোগগুলো প্রতিরোধে সতর্কতা ও সচেতনতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনাগুলো মেনে চললে ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে নিজেকে এবং পরিবারকে সুরক্ষিত রাখা সম্ভব।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post