পরকীয়া এক সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে।
পরকীয়ার বিষাক্ত ছোবলে শতশত সুখের সংসার তছনছ হয়ে যাচ্ছে। ফলে সন্তান হারাচ্ছে মা-বাবা, স্বামীহারা হচ্ছেন স্ত্রী, স্ত্রী হারাচ্ছেন স্বামী। পরকীয়ার বিষবাষ্পে বিপর্যস্ত হচ্ছে পরিবার ও সমাজ। বর্তমানে স্মার্টফোন ব্যবহারের কারণে খুব সহজেই একজন আরেকজনের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এমনই এক ঘটনা ঘটেছে নোয়াখালীর নূর নাহার এবং ওমান প্রবাসী আলতাফের প্রেমের সম্পর্কে।
জানাগেছে, মোবাইলে ফোনের মাধ্যমে কথা বলতে বলতে নোয়াখালীর নূর নাহার এবং ওমানে থাকা আলতাফের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ১০ বছর ওমানে কর্মরত থাকলেও তার অর্থনৈতিক অবস্থা তেমন ভালো ছিল না। নূর নাহার তাকে আর্থিক সহযোগিতা ও আড়াই লাখ টাকা ঋণ পরিশোধের আশ্বাস দেন। একই সঙ্গে নিজের বাড়ির নিচতলায় ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকার ব্যবস্থা করে দেবেন বলেও জানান। এই আশ্বাসে গত বছরের ৮ জুন দেশে আসেন আলতাফ। আশ্বাস অনুযায়ী সহযোগিতা না পাওয়ায় ঘটে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা।
১৪ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নোয়াখালীর মাইজদীতে বাড়িতে ঢুকে নূর নাহার বেগম ও তাঁর মেয়ে ১৬ বছর বয়সী ফাতেমা আজিম প্রিয়ন্তীকে কুপিয়ে হত্যা করে। এ সময় স্থানীয়রা ধাওয়া দিয়ে রক্তমাখা অবস্থায় আলতাফ হোসেনকে আটক করে পুলিশে দেয়।
চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে ১৪ জুন সন্ধ্যায় সুধারাম মডেল থানায় সংবাদ সম্মেলন করেন নোয়াখালীর পুলিশ সুপার শহিদুল ইসলাম। সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, ভিকটিম নূরনাহার বেগমের সঙ্গে প্রবাসে থাকা অবস্থায় রং নম্বরের সূত্র ধরে পরিচয় হয় আসামি আলতাফের। একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে উঠে। এরপর ভিকটিম আসামি আলতাফকে ওমান থেকে দেশে এসে ব্যবসা করার জন্য বলে এবং ব্যবসার সম্পূর্ণ মূলধন এবং তার সব দেনা বহন করার আশ্বাস দেন। সেই হিসেবে গত সপ্তাহ খানেক আগে ওমান থেকে ভিসা বাতিল করে দেশে আসেন তিনি।
এদিকে জনতার হাতে আটক হওয়ার পর আলাপ জানান, কয়েক বছর ধরে তিনি নূরনাহারকে লাখ লাখ টাকা দিয়েছেন। নূরনাহার তাকে বিয়ে করবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন। এখন টাকাও দেয় না; বিয়ে করতে অস্বীকার করায় তিনি মেজাজ হারিয়ে ফেলেছেন।
নিহত নূর নাহার বেগমের স্বামী ফজলে আজিম কচি জেলা শহরে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চাকরি করেন। ওই বাড়ির দোতলায় তিনি স্ত্রী নূর নাহার, মেয়ে প্রিয়ন্তী ও ছেলে রবিউল আলম হৃদয়কে নিয়ে থাকেন। নিচতলায় ভাড়াটেরা থাকেন। প্রিয়ন্তী চলতি বছর স্থানীয় হরিনারায়ণপুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। ছেলে হৃদয় একই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post