দুই বাংলাদেশি কর্মীকে অবৈধভাবে ব্যবসা পরিচালনায় সহায়তা করার দায়ে এক সৌদি নারীকে দেশটির আদালত শাস্তি দিয়েছেন। একইসঙ্গে ওই দুই বাংলাদেশি কর্মীকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং ভবিষ্যতে তাদের আর কখনো সৌদি আরবে কাজের জন্য প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না।
বুধবার সৌদি গেজেটের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। মক্কার ফৌজদারি আদালত এই রায় প্রদান করেছে, যা দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত হয়েছে। আদালত অভিযুক্ত সৌদি নারী ও ওই দুই বাংলাদেশি কর্মীকে ১ লাখ ৫০ হাজার রিয়াল জরিমানা করেছে। পাশাপাশি, আদালতের আদেশে ওই নারীর কোম্পানির নিবন্ধন বাতিল, লাইসেন্স স্থগিত এবং কোম্পানির যাবতীয় কার্যক্রম, জাকাত, ফি ও ট্যাক্স গ্রহণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
সৌদি গেজেটের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ‘তাস্তুরি’ করার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। ‘তাস্তুরি’ হলো এমন একটি অবৈধ প্রক্রিয়া, যেখানে কোনো বিদেশি ব্যক্তি সৌদি নাগরিকের নামে কোম্পানি খুলে ব্যবসা পরিচালনা করেন, কারণ বিদেশি বিনিয়োগের জন্য কমপক্ষে ১০ লাখ রিয়াল মূলধন থাকার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। যাদের এই পরিমাণ অর্থ নেই, তারা স্থানীয়দের সহায়তায় এই অবৈধ পন্থা অবলম্বন করেন।
আরও পড়ুন
তদন্তে জানা গেছে, অভিযুক্ত সৌদি নারী তার নিজের নামে কোম্পানি খুলে ওই দুই বাংলাদেশিকে মক্কায় পরিবহন ব্যবসা পরিচালনা করার সুযোগ দিয়েছিলেন। এর মাধ্যমে ওই দুই বাংলাদেশি অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করে তা সৌদির বাইরে পাচার করছিলেন। এছাড়াও, ওই নারী নিজের নামে ঋণ নিয়ে ট্যাংকার কিনেছিলেন, যা ওই দুই বাংলাদেশি নিজেদের মালিকানাধীন বলে পরিচয় দিত এবং বাণিজ্যিক চুক্তি সহ যাবতীয় কার্যক্রম তারাই পরিচালনা করত।
আদালতের এই কঠোর পদক্ষেপ অবৈধ ব্যবসা এবং বিদেশি কর্মীদের অবৈধ উপায়ে উপার্জনে সহায়তাকারী স্থানীয়দের বিরুদ্ধে একটি স্পষ্ট বার্তা বহন করে। একইসঙ্গে, অবৈধভাবে ব্যবসার সাথে জড়িত বিদেশি কর্মীদেরও কঠোর পরিণতির মুখে পড়তে হচ্ছে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সৌদি আরবে কর্মরত অন্যান্য অবৈধ শ্রমিক এবং তাদের সহায়তাকারীরা সতর্ক হবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।