পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মীরের বিভিন্ন স্থানে মঙ্গলবার মধ্যরাতে ভারতের আকস্মিক মিসাইল হামলায় দেশটির আকাশসীমা জুড়ে তৈরি হয়েছে চরম অনিশ্চয়তা ও নিরাপত্তা ঝুঁকি। এই অপ্রত্যাশিত হামলার কারণে আন্তর্জাতিক বিমান চলাচলে বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে। বাংলাদেশগামী দুটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট, তুর্কিশ এয়ারলাইন্সের (টিকে-৭১২) ইস্তাম্বুল থেকে ঢাকাগামী ফ্লাইট এবং কুয়েত এয়ারওয়েজের (জে-৯৫৩৩) কুয়েত সিটি থেকে ঢাকাগামী ফ্লাইট, পাকিস্তানের আকাশপথের নিরাপত্তা শঙ্কায় মাঝ আকাশ থেকে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছে।
ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ফ্লাইটরাডার২৪ এর তথ্য অনুযায়ী, তুর্কিশ এয়ারলাইন্সের টিকে-৭১২ ফ্লাইটটি পাকিস্তানের আকাশসীমায় প্রবেশের পর বাংলাদেশে আসার সিদ্ধান্ত বাতিল করে ওমানের মাসকট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। অন্যদিকে, কুয়েত এয়ারওয়েজের জে-৯৫৩৩ ফ্লাইটটি কুয়েত সিটি থেকে উড্ডয়নের প্রায় দেড় ঘণ্টা পর ফের কুয়েতে ফিরে যায়। ফ্লাইটগুলোর এই আকস্মিক যাত্রা পরিবর্তনের প্রধান কারণ হিসেবে পাকিস্তানের আকাশপথের অনিরাপদ পরিস্থিতিকেই চিহ্নিত করা হচ্ছে।
এদিকে, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা থেকে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী বেশ কয়েকটি ফ্লাইট সাধারণত পাকিস্তানের আকাশপথ ব্যবহার করে থাকে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে ওই ফ্লাইটগুলো নিরাপদে বিকল্প আকাশপথ ব্যবহার করে তাদের গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ফ্লাইটগুলোর চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে এবং কোনো ধরনের বিলম্ব বা বাতিল হওয়ার ঘটনা ঘটেনি।
আরও পড়ুন
অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে একটি সামরিক অভিযান শুরু করেছে। এই অভিযানের আওতায় পাকিস্তান এবং পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের নয়টি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে। কাশ্মীরের চলমান উত্তপ্ত পরিস্থিতি এবং ভারতের এই সামরিক অভিযানের ফলে পাকিস্তানের আকাশসীমায় উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এই কারণে আন্তর্জাতিক বিমান রুটগুলোতে বড় ধরনের disruption দেখা দিয়েছে, যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে বিমান চলাচলের স্বাভাবিক গতিতে।
ভারতের এই আকস্মিক হামলা এবং পাকিস্তানের আকাশসীমায় সৃষ্ট নিরাপত্তাহীনতার কারণে আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্সগুলো এখন পাকিস্তান হয়ে তাদের ফ্লাইট পরিচালনার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করছে। যাত্রীদের নিরাপত্তা এবং ফ্লাইটের স্বাভাবিক চলাচল বজায় রাখতে বিকল্প পথ অনুসন্ধানের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। এই ঘটনাটি আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতির অস্থিরতা এবং এর ফলস্বরূপ আন্তর্জাতিক বিমান চলাচলের উপর কতটা প্রভাব পড়তে পারে, তারই একটি স্পষ্ট উদাহরণ।