দীর্ঘসময় ধরে ‘এক পরিবার এক সন্তান নীতি’ কঠোরভাবে মেনে চলেছে এশিয়ার পরাশক্তি চীন। ১৯৭৯ সালে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার নিয়ন্ত্রণ করে অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে এক সন্তান নীতি চালু করে দেশটি। ক্রমেই জনসংখ্যা কমতে থাকলে ২০১৫ সালে দুই সন্তান নীতি চালু করে। এরপরও ক্রমাগত জনসংখ্যা হ্রাস কমাতে না পারায় ২০২১ সালে তিন সন্তান নীতিতে যায় চীন। গত বছর দেশটিতে দ্বিতীয়বারের মতো জনসংখ্যার অবনতি দেখা যায়।
১৪০ কোটি জনসংখ্যা নিয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশ হওয়ার পরও চীনে অর্থনীতির প্রয়োজনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জনসংখ্যা বাড়েনি। বয়স্ক জনসংখ্যার তুলনায় তরুণ জনগোষ্ঠী অনেক কমে গেছে। যার প্রভাব পড়ছে অর্থনীতিতে।
নানাভাবে প্রণোদনা দিয়েও তরুণদের সন্তান নিতে উৎসাহিত করতে পারছে না সরকার। এবার কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ‘প্রেম শেখানোর কোর্স’ চালু করার আহ্বান জানিয়েছে সরকার। ক্রমহ্রাসমান জন্মহার সমস্যার সমাধান করতে ছেলে–মেয়েদের প্রেম করতে শেখাতে চায় দেশটি!
জনসংখ্যা বাড়ানোর লক্ষ্যে তরুণ দম্পতিদের সন্তান নিতে উদ্বুদ্ধ করতে উদ্যোগী হয়েছে চীন। বিয়ের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি, প্রেম, সন্তান ধারণ এবং পরিবারের গুরুত্ব বোঝাতে ‘লাভ এডুকেশন’ কোর্স চালু করার পরামর্শ দিয়েছে।
রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম চায়না পপুলেশন নিউজের বরাতে জিয়াংসু সিনহুয়া সংবাদপত্র জানায়, কলেজ শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতে প্রজননের মূল চালিকাশক্তি হবে। কিন্তু তারা প্রেম ও বিয়ের ব্যাপারে যে দৃষ্টিভঙ্গি লালন করে তার উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন প্রয়োজন। তাদের জন্য ভালোবাসা ও বিয়ে নিয়ে শিক্ষা গ্রহণ প্রয়োজন হয়ে উঠছে।
এই কোর্স বিয়ের স্বাস্থ্যকর ও ইতিবাচক দিক এবং সন্তান ধারণের বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাবতে শেখাবে বলে আশা করছে সরকার। চীন সরকার স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে, তারা যেন ‘সঠিক বয়সে’ বিয়ে এবং সন্তান ধারণের বিষয়টি নিয়ে প্রচার চালায়, যাতে মানুষের মনে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।
একটি জরিপে দেখা গেছে, চীনের ৫৭ শতাংশ কলেজ শিক্ষার্থী প্রেম করতে চায় না। কারণ হিসেবে তারা বলছে, পড়াশোনা ও ভালোবাসার সম্পর্কের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে অসুবিধা হয়।
চীন পপুলেশন নিউজ বলছে, প্রেম ও বিয়ে সম্পর্কে সঠিক ধারণার অভাবে শিক্ষার্থীরা এমনটা ভাবছে। তাদের এ বিষয়ে ধারণা অস্পষ্ট। প্রেম ও বিয়ে নিয়ে তাদের স্বচ্ছ ধারণা থাকা প্রয়োজন।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post