জাতীয় টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার-এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক ও সাবেক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানকে বসনিয়া-হার্জেগোভিনার কসাই রাদোভান কারাদিচের সঙ্গে তুলনা করে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, তিনি ছিলেন গোপন বন্দিশালার সিপাহসালার।
(২০ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালে শুনানিতে এ সব কথা বলেন তাজুল ইসলাম।
জিয়াকে বসনিয়া-হার্জেগোভিনার কসাই রাদোভান কারাদিচের সঙ্গে তুলনা করে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, তিনি ছিলেন গোপন বন্দিশালার সিপাহসালার।
এদিন জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাবেক পুলিশ প্রধান ও এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালকসহ আট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এক মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। একসঙ্গে তাদের ট্রাইব্যুনালের মামলায় কারাগারে রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ১৯ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
এর আগে প্রিজন ভ্যানে করে ৭ পুলিশ কর্মকর্তা ও সাবেক সেনাকর্মকর্তা জিয়াউল আহসানকে হাজির করা হয় ট্রাইব্যুনালে।
১৬ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট-এ তিন সপ্তাহে দেশজুড়ে যখন নির্বিচারে হত্যা, গণহত্যা চালানো হয় ওইসময় পুলিশের প্রধান ছিলেন চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। তাকে প্রধান আসামি করে মামলা হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।
সকালে ১১টার পর শুরু হয় বিচারিক কার্যক্রম। শুরুতেই চিফ প্রসিকিউটর জুলাই-আগস্ট গণহত্যায় চৌধুরী মামুনের কমান্ড কীভাবে সারা দেশের পুলিশ সদস্যদের হিংস্র করে তোলো, নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর গুলি করতে উস্কে দেন তা তুলে ধরে তিনি ছিলেন, সব কিছুর সুপ্রিম কমান্ডার তিনি।
এরপর সাবেক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান কিভাবে ইন্টারনেট বন্ধ করে গণহত্যায় উস্কে দেন তা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তুলে ধরেন চিফ প্রসিকিউটর।
জিয়াকে বসনিয়া-হার্জেগোভিনার কসাই রাদোভান কারাদিচের সঙ্গে তুলনা করে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, তিনি ছিলেন গোপন বন্দিশালার সিপাহসালার।
এরপর আশুলিয়ায় পুলিশের গাড়িতে ৬ জনকে পুড়িয়ে মারা, যাত্রাবাড়ীর গণহত্যা, মিরপুর হত্যার বর্ণনা দেন চিফ প্রসিকিউটর। বলা হয়,অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তারা যা করেছেন তা শয়তানও করতো বলে মনে হয় না। এরপর এ ৮ জনকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।
এদিন কাঠগড়ায় হাত উচিয়ে হাউ মাউ করে কেঁদে ওঠেন গুলশান থানার সাবেক ওসি মাজহারুল ইসলাম; বলেন তিনি ছাত্রদের পক্ষে ছিলেন, চান ন্যায় বিচার। ট্রাইব্যুনাল বললেন ন্যায় বিচার পাবেন তিনি।
এসময় জিয়াউল আহসান বলেন, তিনি কখনো আয়না ঘরের দায়িত্বে ছিলেন না। তবে বাকিদের নিশ্চিন্তে থাকতে দেখা যায়।
আগামী ১ মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হয়েছে ১৯ ডিসেম্বর।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post