ইউক্রেনকে মার্কিন অস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার গভীরে হামলা করার অনুমতি দিয়েছে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন। (১৭ নভেম্বর) দুইজন মার্কিন কর্মকর্তা এবং সিদ্ধান্তের সাথে জড়িত একটি সূত্র এমন তথ্য জানিয়েছে। এটি ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাতে ওয়াশিংটনের নীতিতে বড় পরিবর্তন নির্দেশ করে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
সূত্র অনুযায়ী, ইউক্রেন আগামী কয়েক দিনের মধ্যে প্রথমে দূরপাল্লার হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছে। তবে অভিযান-সংক্রান্ত নিরাপত্তার কারণে হামলা সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
এই সিদ্ধান্ত এসেছে এমন এক সময়ে, যখন ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হিসেবে ২০ জানুয়ারি ক্ষমতা গ্রহণের জন্য অপেক্ষা করছেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি গত কয়েক মাস ধরে মার্কিন অস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার সীমান্তের অনেক ভেতরে হামলা চালানোর অনুমতির জন্য আহ্বান জানিয়ে আসছিলেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাশিয়ার পক্ষ থেকে উত্তর কোরিয়ার স্থলবাহিনী মোতায়েনের মতো পদক্ষেপ ওয়াশিংটন ও কিয়েভকে গভীর উদ্বেগে ফেলেছে, যা এই নীতিগত পরিবর্তনের প্রধান কারণ।
জেলেনস্কি তার সন্ধ্যার ভাষণে বলেছেন, ‘এই ক্ষেপণাস্ত্র নিজেরাই কথা বলবে।’
হোয়াইট হাউস এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। ক্রেমলিনের পক্ষ থেকেও তাৎক্ষণিক কোনও প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে তারা পূর্বে সতর্ক করেছিল যে, ইউক্রেনকে মার্কিন অস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার ভেতরে হামলা চালানোর অনুমতি দেওয়া হলে তা বড় ধরনের উত্তেজনা তৈরি করবে।
রাশিয়ার সংসদের আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির উপপ্রধান ভ্লাদিমির জাবারভ সতর্ক করেছেন, ‘ওয়াশিংটন কিয়েভকে রাশিয়ার গভীরে আঘাত করার অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত এই সংঘাতকে বিশ্বযুদ্ধের দিকে নিয়ে যেতে পারে।
এদিকে রাশিয়ার পার্লামেন্টের উচ্চ কক্ষের সিনিয়র সদস্য আন্দ্রেই ক্লিশাস বলেছেন, ‘পশ্চিম এমন একটি পর্যায়ের উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে যা এক রাতেই ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করতে পারে।
রাশিয়ার ভূখণ্ডের গভীরে প্রথম হামলা সম্ভবত এটিএসিএমএস রকেট দিয়ে চালানো হবে। এসব রকেট ১৯০ মাইল (৩০৬ কিলোমিটার) দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে।
কিছু মার্কিন কর্মকর্তার মতে, দূরপাল্লার হামলার অনুমতি যুদ্ধের সামগ্রিক গতিপ্রকৃতিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে পারবে না। তবে এটি রাশিয়ার অগ্রগতির মোকাবিলা করতে এবং সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি আলোচনার সময় কিয়েভকে শক্তিশালী অবস্থানে রাখতে সাহায্য করতে পারে।
এদিকে ট্রাম্প ক্ষমতায় গেলে বাইডেনের এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করবেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরে ইউক্রেনকে দেওয়া মার্কিন আর্থিক ও সামরিক সহায়তার পরিমাণ নিয়ে সমালোচনা করে আসছেন। নির্বাচনি প্রচারে তিনি যুদ্ধ দ্রুত শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যদিও কীভাবে তা করবেন তা ব্যাখ্যা করেননি।
ট্রাম্পের একজন মুখপাত্র তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। তবে তার ঘনিষ্ঠ পররাষ্ট্র নীতি উপদেষ্টা রিচার্ড গ্রেনেল এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেছেন, ‘বিদায় নেওয়ার আগে বাইডেন যুদ্ধগুলো আরও বাড়িয়ে দিচ্ছেন।
বাইডেন প্রশাসনের সিনিয়র কর্মকর্তারা বলেছেন, ট্রাম্পের জয়ের পর অবশিষ্ট সময়ে ইউক্রেনের যুদ্ধ সক্ষমতা নিশ্চিত করতে এবং রাশিয়ার সঙ্গে শক্তিশালী অবস্থান থেকে শান্তি আলোচনার সুযোগ তৈরিতে তারা উদ্যোগী।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post