লেবাননের রাজধানী বৈরুতগামী ফ্লাইট স্থগিত করেছে কাতার এয়ারওয়েজ। মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) কাতারের জাতীয় এয়ারলাইন্স এ ঘোষণা দেয়। স্থগিত সময়ে বৈরুত থেকেও কোনো ফ্লাইট আকাশে উড়বে না।
এক বিবৃতিতে কাতার এয়ারওয়েজ জানায়, সাময়িকভাবে বৈরুতগামী ফ্লাইট স্থগিত করা হয়েছে। আগামী বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত এ স্থগিতাদেশ থাকবে। এ সময়ে রাফিক হারিরি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কাতার এয়ারওয়েজের কোনো ফ্লাইট অবতরণ করবে না এবং সেখান থেকে কোনো ফ্লাইট যাত্রা করবে না।
হঠাৎ এ ধরনের সিদ্ধান্তের কারণ হিসেবে লেবাননের চলমান পরিস্থিতি উল্লেখ করেছে সংস্থাটি। বলেছে, ‘আমাদের যাত্রীদের নিরাপত্তা আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার’। বুধবারের পর সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে তারা।
এর আগে জার্মানির লুফথানসা, এয়ার ফ্রান্স এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডেল্টা এয়ার লাইনসও বৈরুতে ফ্লাইট স্থগিত করেছে। অপরদিকে ইসরায়েল এবং ইরানের কিছু উড়োজাহাজ যাতায়াত করলেও স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।
শুধু উড়োজাহাজ পরিষেবাই নয়; ইসরায়েলের চলমান বিমান হামলার কারণে লেবাননের স্থলপথে যাতায়াতও ব্যাহত হচ্ছে। দক্ষিণ লেবাননের সঙ্গে বৈরুতের সংযোগকারী মহাসড়কে একের পর বোমা ফেলছে ইসরায়েলি বিমান।
দক্ষিণ লেবানন থেকে পালিয়ে আসা কয়েকটি পরিবার আলজাজিরাকে বলেছে, ‘আমাদের চারপাশে বোমাবর্ষণ হচ্ছিল। ওই সময় পালানোর জন্য ঘর থেকে বের হতে হয়েছিল। কিন্তু যেখানেই যাচ্ছিলেন সেখানেই অবিরাম বিমান হামলা হয়েছে। আপনি জানেন না কোন রাস্তাটি নিরাপদ, এমনকি দক্ষিণ লেবাননের সাথে বৈরুতের সংযোগকারী প্রধান মহাসড়কেও বিমান হামলা দেখে এসেছি।
সম্প্রতি লেবাননজুড়ে ওয়াকিটকি ও পেজার বিস্ফোরণে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটে। এরপর বৈরুতে ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহর একাধিক ঊর্ধ্বতন কমান্ডারসহ ৩৭ জন নিহত হন। এরপর প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েলের রামাত ডেভিড ঘাঁটিতে পাল্টা হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহও।
জবাবে লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের সর্বত্র অবিরাম বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। পরিস্থিতি এতই ভয়াবহ যে, সেখানকার বাসিন্দারা পালানোর সুযোগও পাচ্ছে না। ইসরায়েলি জঙ্গি বিমানের গোলা যেন তাদের তাড়া করে বেড়াচ্ছে।
আলজাজিরার মঙ্গলবারের (২৪ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে বলা হয়, হিজবুল্লাহর অবস্থান লক্ষ্য করে বিমান হামলা চলছে। ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা থেকে কোনো স্থাপনাই এখন নিরাপদ নয়। সোমবার থেকে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৩৫ শিশুসহ ৪৯২ জন নিহত হয়েছেন। হাজারো মানুষ আহত হয়ে কাতরাচ্ছেন।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে। বেসামরিক নাগরিক তাদের লক্ষ্যবস্তু নয়। যুদ্ধক্ষেত্রে সহিংসতার সম্মুখীন হওয়া এড়াতে হিজবুল্লাহ সক্রিয় রয়েছে, এমন এলাকা থেকে লেবাননের বাসিন্দাদের সরে যেতে বলেছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। অব্যাহত হামলার মুখে দক্ষিণ লেবানন থেকে লোকজনকে সরে যেতে দেখা গেছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post