মহামারি করোনা ভাইরাসে দেশে গত তিন মাসের সর্বোচ্চ করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে আজ। ২৪ ঘণ্টায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৮৬৫ জন এবং মৃতের সংখ্যা ১১ জন। এদিকে মহামারী নিয়ন্ত্রণে দেশে ফের লকডাউন, আসন্ন বইমেলা স্থগিত ও ঈদের একদিন ছুটিসহ ১২ দফা সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
গতকাল মঙ্গলবার (১৬-মার্চ) এসব বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং মন্ত্রীপরিষদ সচিবকে লিখিতভাবে জানানো হয়। অধিদপ্তর মনে করে, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এসব বিধিনিষেধ বাস্তবায়নের বিকল্প নেই।
গত ডিসেম্বরের পর সংক্রমণের মাত্রা ধীরে ধীরে কমতে থাকলেও চলতি মার্চের শুরু থেকে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। দৈনিক শনাক্ত রোগীর হার সোমবারও ৯ শতাংশ পেরিয়ে গেছে, যা দুই মাস আগে ৩ শতাংশের নিচে নেমেছিল। দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা আবার ১৭ শর ঘরে উঠেছে, যা এক মাস আগেও তিনশর ঘরে ছিল। গত দুই দিনেই ২৬ জন করে মারা গেছেন এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে।
দেশে করোনা শনাক্তের এক বছর পার হওয়ার পর দুই মাসের ব্যবধানে গত বুধবার আবারও হাজারের ঘরে পৌঁছায় শনাক্তের সংখ্যা। এরপর থেকে করোনা শনাক্তের সংখ্যা হাজারের নিচে নামেনি। রোববার (১৪ মার্চ) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ১১৫৯ জনের করোনা শনাক্তের কথা জানিয়েছিল। সোমবার শনাক্ত হয়েছিল ১৭৭৩ জন এবং আজ আক্রান্তের সংখ্যা গত ৩ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মিনি কনফারেন্স রুমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সভাপতিত্বে কোভিড-১৯ প্রতিরোধ ও বর্তমানে করণীয় সম্পর্কে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ১২টি প্রস্তাব গৃহীত হয়।
এগুলো হলো- ১. সম্ভব হলে কমপ্লিট লকডাউনে যেতে হবে। সম্ভব না হলে ইকোনমিক ব্যাল্যান্স রেখে যেকোনো জনসমাগম বন্ধ করতে হবে। ২. কাঁচা বাজার, পাবলিক ট্রান্সপোর্ট, শপিংমল, মসজিদ, রাজনৈতিক সমাগম, ভোট অনুষ্ঠান, ওয়াজ মাহফিল, পবিত্র রমজান মাসের ইফতার মাহফিল ইত্যাদি অনুষ্ঠান সীমিত করতে হবে। ৩. শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেগুলো বন্ধ আছে সেগুলো বন্ধ রাখতে হবে। অন্যান্য কার্যক্রম সীমিত রাখতে হবে। ৪. যেকোনো পাবলিক পরীক্ষা (বিসিএস, এসএসমি, এইচএসসি, মাদ্রাসা, দাখিলসহ অন্যান্য) বন্ধ রাখতে হবে।
৫. কোভিড পজিটিভ রোগীদের আইসোলেশন জোরদার করা। ৬. যারা রোগীদের কন্ট্রাকে আসবে তাদের কঠোর কোয়ারেন্টিনে রাখা ৭. বিদেশ থেকে বা প্রবাসী যারা আসবেন তাদের ১৪ দিনের কঠোর কেয়ারেন্টিনে রাখা এবং এ ব্যাপারে সামরিক বাহিনীর সহায়তা নেওয়া ৮. আগামী ঈদের ছুটি কমিয়ে আনা ৯. স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে আইন প্রয়োজনে জোরদার করা ১০. পোর্ট অব এন্ট্রিতে জনবল বাড়ানো এবং মনিটরিং জোরদার করা, ১১. সব ধরনের সভা ভার্চুয়াল করা এবং ১২. পর্যটন এলাকায় চলাচল সীমিত করা।
আরো পড়ুনঃ
ভালো কাজের এই প্রতিদান!
ওমান রুটে বিমানের এ কি হাল!
ওমানের সকল ফ্লাইট নিষিদ্ধ করলো যুক্তরাজ্য
পাসপোর্ট নিয়ে চরম ভোগান্তিতে ওমান প্রবাসীরা
দাঁড়ি ওয়ালাদের জন্য এক লাখ টাকার অফার ঘোষণা
ফেসবুক প্রতারণা থেকে প্রবাসীদের সতর্ক থাকার আহ্বান
সৌদির নতুন শ্রম আইনে কতটা সুবিধা পাবেন বাংলাদেশিরা?
এসব প্রস্তাবের পাশাপাশি কয়েকজন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আরও ৫টি প্রস্তাবনা দিয়েছেন। সেখানে তারা বলেছেন- বইমেলা বাতিল করতে হবে, বদ্ধস্থানে বা কক্ষে ইফতার পার্টি না করতে নির্দেশনা দিতে হবে, ঈদের ছুটি কমিয়ে ১ দিন করতে হবে, কক্সবাজারসহ পর্যটন এলাকায় যাতায়াত সীমিত করতে হবে এবং মসজিদে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নামাজের ব্যবস্থা করতে হবে।
সভায় আলোচিত ১২টি প্রস্তাবনার বিষয় ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয় এবং মন্ত্রীপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র এবং রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম। সরকারের পরবর্তী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কাজ করবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post