শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে এতো সহিংসতায় লজ্জা প্রকাশ করে সবমৃত্যু খুবই দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি ৬ সমন্বয়ককে কোন আইনে ডিবি কার্যালয়ে রাখা হয়েছে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন উচ্চ আদালত।
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) এক রিটের শুনানি ঘিরে এজলাসে হইচই ও হট্টগোলের ঘটনাও ঘটেছে। পরে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামীকাল বুধবার (৩১ জুলাই) দিন ধার্য করেন আদালত।
আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে সরাসরি গুলি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৬ সমন্বয়কে ডিবি কার্যালয়ে রাখা নিয়ে মামলার শুনানিতে ব্যাপক হট্টগোল হয়েছে। এদিন শুনানিতে আওয়ামী লীগপন্থি বিপুল সংখ্যক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন রিটের সমথর্নে অনেক আইনজীবীও।
শুনানিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে প্রাণহানির ঘটনা দুঃখজনক বলে মন্তব্য করে উচ্চ আদালত বলেন, এতে তারা লজ্জিত কেননা মানুষ ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আবার গ্রেফতার বা আটক না করে কাউকে দিনের পর দিন ডিবি হেফাজতে রাখা আইনসম্মত কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন আদালত।
শুনানি শেষে রিটকারী আইনজীবীরা বলেন, আন্দোলন দমনে সরাসরি গুলি কোনোভাবেই করতে পারে না পুলিশ। দিতে হবে প্রত্যেকটি গুলির ব্যাখ্যা। ডিবি অফিসে কী হয়েছে তা জানতে ৬ সমন্বয়ককে আদালতে হাজির করার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অনিক আর হক বলেন, পুলিশ যখন গুলি করবে, তখন বলা থাকে সর্বনিম্ন যেন ক্ষতি হয়। অর্থাৎ কারও প্রাণ কেড়ে নেয়ার জন্য গুলি করতে পারবে না। আদালত থেকে ডিবি অফিসের দূরত্ব দেড় থেকে ২ কিলোমিটারের। সেখানে থেকে এখানে আনতে কয়েক মিনিট সময় লাগবে। কিন্তু তারা আনছেন না।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মানজুর আল মতিন বলেন, যে পারে বা যারা পারে; এই গুলিটা থামানোর চেষ্টা করা হয়। আমরা আমাদের সন্তানদের রক্ষা করার জন্য এসেছি। কারও বাপের প্রয়োজনে এখানে আসিনি।
রিটের ঘোর বিরোধিতা করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। তারা বলছেন, মিডিয়া কাভারেজ এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই রিট করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেছেন, কোটা আন্দোলনের ৬ জন সমন্বয়কারী তাদের আদালতে আনতে একটা নির্দেশনা চেয়েছিল এবং তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য একটা আদেশ চেয়েছিল। দেড় পাতার একটা পিটিশন, যার মধ্যে কিছু নেই। কোনো স্বীকারোক্তিমূলক কিছু নেই, সেখানে তারা যে শুনানি করছেন, বাইরের জিনিস নিয়ে যা শুনানি করার এখতিয়ার নেই। বুধবার (৩১ জুলাই) এ বিষয়ে ফের শুনানি হবে। এরপরই আদেশ দেবেন উচ্চ আদালত।
এর আগে সোমবার (২৯ জুলাই) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের হাইকোর্ট বেঞ্চে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মানজুর আল মতিন ও আইনুন্নাহার সিদ্দিকা লিপি এ রিট দায়ের করেন।
এ রিটে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক, সেনাবাহিনী প্রধানসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়। ওই রিটে কোটা সংস্কার আন্দোলনরতদের ওপর গুলি না চালানোর নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। একইসঙ্গে রিটে কোটা আন্দোলনের ৬ জন সমন্বয়কের ডিবি হেফাজত থেকে মুক্তির নির্দেশনা চাওয়া হয়।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post