নিউইয়র্কে প্রবাসীদের সাথে ১৪ জুলাই রবিবার রাতে এক মতবিনিময় সমাবেশে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এবং সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে এ মোমেন বলেছেন, খেটে খাওয়া প্রবাসী এবং তাদের স্ত্রী-সন্তান-স্বজনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত কল্পে স্মার্ট কার্ড ইস্যু করা হবে।
এ ব্যাপারে অর্থমন্ত্রীর সম্মতিও পাওয়া গেছে। এই কার্ডধারীরা বাংলাদেশের যে কোনো এয়ারপোর্টে বিশেষ চ্যানেলে যাতায়াত করতে পারবেন। প্রবাসীর সন্তানেরা ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পাবেন। যে কোনো অফিসে প্রয়োজনীয় কাজেও অগ্রাধিকার পাবেন।
ড. মোমেন উল্লেখ করেন, যারা অনেক বেশি পরিমাণে রেমিটেন্স পাঠাচ্ছেন তাদেরকে সিআইপি কার্ড দেয়া হয়েছে। কিন্তু খেটে খাওয়া সাধারণ প্রবাসীরা দেশে ফেরার সময় এয়ারপোর্টে অবহেলিত হচ্ছেন, নিজ এলাকার অফিস-আদালতে অনেক সময়েই পাত্তা পাচ্ছেন না।
এসব রেমিটেন্স যোদ্ধার সন্তানেরাও লেখাপড়ায় তেমন সুবিধা পাচ্ছেন না। সামগ্রিক অবস্থার আলোকে এই স্মার্ট কার্ড প্রবর্তনের প্রস্তাব দিয়েছিলাম, তা অর্থ মন্ত্রণালয় গ্রহণ করেছে। আর এভাবেই শেখ হাসিনা যে সত্যিকার অর্থেই প্রবাস-বান্ধব সরকার তা দৃশ্যমান হচ্ছে। ড. মোমেন উল্লেখ করেন, ৩০ ডিসেম্বরকে ‘প্রবাসী দিবস’ ঘোষণা করা হয়েছে।
এরফলে দিবসটিতে বিদেশের সকল মিশনে প্রবাসীরা নিজেদের সমস্যা, অসুবিধার কথা অবাধে উপস্থাপন করতে পারবেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ রচনার পথ বেয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রেও বিদেশের অভিজ্ঞতা স্বাধীনভাবে পেশ করতে পারবেন।
ড. মোমেন টানা ৫ বছর পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ দেয়ায়, মুক্তচিত্তে কল্যাণমূলক কিছু করার উৎসাহ জুগিয়েছেন, সেজন্য প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে যে দায়িত্ব পালন করেছি সেজন্য আমি খুবই গর্বিত। আই অ্যাম এ্যা হ্যাপিম্যান।
আমাকে আবারো পররাষ্ট্র মন্ত্রী করা হয়নি বলে আমার কোন আক্ষেপ নেই। কোটা বিরোধী আন্দোলন প্রসঙ্গে ড. মোমেন বলেন, গত ৪৩ বছর নানা প্রতিকূলতা ডিঙ্গিয়েই শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের মহাসড়কে উঠিয়েছেন, ২০৪১ সালের মধ্যেই উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত হবে বাংলাদেশ।
তাই কোটা বিরোধী আন্দোলনের নামে মহলবিশেষের যে অপতৎপরতার গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে তারও অবসান ঘটবে জননেত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণতাপূর্ণ নেতৃত্বেই। এ নিয়ে সংশয়-সন্দেহের কোন অবকাশ থাকা উচিত নয়।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানের বিরুদ্ধে অসাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এবং অসৎ উপায়ে পদ-পদবি বিক্রির প্রসঙ্গ উত্থাপনের পরিপ্রেক্ষিতে সিলেট-১ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য এবং আওয়ামী লীগের নীতি-নির্দ্ধারকগণের অন্যতম ড. মোমেন বলেন, তৃণমূলের নেতা-কর্মীগণের খুবই গুরুত্ব দিয়ে আসছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।
তার সমীপে বিরাজিত পরিস্থিতি যথাযথভাবে উপস্থাপন করা হলে নিশ্চয়ই তিনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন সামনের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগদানের সময়।
দীর্ঘ ৫ বছর অত্যন্ত সুনামের সাথে দায়িত্ব পালনের মধ্যদিয়ে বিশ্বসভায় বাংলাদেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যান। তার সুফল হিসেবে শেখ হাসিনা ড. মোমেনকে মার্কিন নাগরিকত্ব ত্যাগের পর সিলেট-১ থেকে দলীয় মনোনয়ন দেন।
সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবার পর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছিলেন। সেটিও অত্যন্ত সুনামের সাথে ৫ বছর পালন করেছেন। ২০ জুলাই তার বাংলাদেশে ফেরার কথা।
এর আগে, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের যুক্তরাষ্ট্র শাখার নয়া কমিটির সাথেও এক মতবিনিময় সমাবেশে মিলিত হবেন এই ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ড. মোমেন।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।

Discussion about this post