মধ্য এশিয়ার অ্যারাল সাগরকে বলা হতো পৃথিবীর চতুর্থ বৃহত্তম হৃদ। যতদূর চোখ যেত ছিলো পানি আর পানি। কিন্তু গত চল্লিশ বছরে ষাটহাজার বর্গ কিলোমিটার আয়তনের আর প্রায় ৪০ মিটার গভীরের হৃদটি স্রেফ আকাশে মিলিয়ে গেছে। এখন সেখানে ধু ধু মরুভূমি। লেকের চিহ্ন হিসাবে শুধুমাত্র ১০% আয়তনের একটি জলাধার রয়েছে। এই ঘটনাকে জলবায়ু পরিবর্তনে এই শতকের সবচেয়ে বড় বিপর্যয়ের একটি বলে ধরা হয়।
কাজাখিস্তানের এই যালান্যাশ গ্রামে এখন পানির কোন চিহ্নই নেই। শুধুমাত্র খয়েরি মাটি আর বাতাসে ওড়ানো ধুলা ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়ে না। খোজাবে নামে স্থানীয় এক জেলে বলছিলেন, এই সাগরে এসেই পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়তেন তারা। সৈকতে তাদের বাচ্চারা বসে বসে রোদ পোহাতো।
এলাকাটিতে ঘুরলে বালুর উপর বেশ কয়েকটি বিশাল আকারের মাছ ধরার নৌকা পরিত্যক্ত অবস্থায় দেখা যাবে। একেকটি নৌকায় মানুষ ধরতো কুড়িজনের বেশি। তথ্য বলছে, একসময়ে অ্যারাল লেক থেকে সোভিয়েত ইউনিয়নের এক-পঞ্চমাংশ মাছের যোগানও হতো। আর তীরের মাটিতে তরমুজ, গমের মতো ফসল হতো। কিন্তু আস্তে আস্তে বৃষ্টি কমে যেতে শুরু করে আর ঘাস মরে যায়। এখন আর সেখানে ফসলও হয় না।
জেলে খোজাবে জানান, এই লেক থেকে চারশো কেজির বেশি একটি মাছ ধরেছিলেন। আর একশ কেজির বেশি মাছ ধরাটা খুবই স্বাভাবিক ছিল। সর্বশেষ ১৯৭৬ সালে তিনি একটি মৃত মাছ ধরেছিলেন। তারপর আর কোন মাছ তিনি পাননি।
এখন গ্রামের অন্যদের মতোই দুইহাজার কিলোমিটার দুরে, লেক বাল্কশাহে তিনি মাছ ধরতে যান। বছরের অর্ধেক সময় মাছ ধরেন। সেই জমানো টাকা দিয়ে বাকি সময় গ্রামে কাটান। খোজাবে জানেন, হয়তো এখানে আর তিনি কখনোই সেই সাগর আর পানি দেখতে পাবেন না।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post