কাতারের সঙ্গে বিরোধ অবসানে ঐতিহাসিক চুক্তি করেছে সৌদি আরবসহ উপসাগরীয় দেশগুলো। সংহতি ও স্থিতিশীলতার চুক্তি বলে মন্তব্য করেছেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। একই সঙ্গে ইরানের হুমকি মোকাবিলার ডাক দেন তিনি। চুক্তি হওয়ায় স্বাগত জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।
মঙ্গলবার (০৫ জানুয়ারি) সৌদি আরবের আল-উলা শহরে আয়োজিত গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিলের সম্মেলনে কাতারের সঙ্গে বিরোধ অবসানে ঐতিহাসিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। এরপর চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন কাতারের আমির ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রধানমন্ত্রী।
সম্মেলনে যোগ দিতে মঙ্গলবার সৌদি আরবের আল-উলা শহরে যান কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানি। তাকে আলিঙ্গন করে সৌদি যুবরাজ সালমান যে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছেন তা দুই দেশের বৈরিতা অবসানেরই স্পষ্ট ইঙ্গিত।
চুক্তিটি উপসাগরীয় অঞ্চলে ঐক্য ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে বলে জানান সৌদি যুবরাজ। এ সময় চুক্তিতে মধ্যস্থতা করায় যুক্তরাষ্ট্র ও কুয়েতকে ধন্যবাদ দেন সালমান। একই সঙ্গে ইরানের হুমকি মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
আরো পড়ুনঃ ইয়েমেনের ভূমি নিয়ে মুখোমুখি সৌদি-ওমান
মোহাম্মদ বিন সালমান জানান, আমাদের অঞ্চলের উন্নতির জন্য ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা জরুরি। এই চুক্তি সেই কাজটি করবে। একই সঙ্গে ইরান যা করছে তা এই অঞ্চলের জন্য হুমকি। তাদের বিরুদ্ধে একসঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়ার সময় এসেছে।
ইরানকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে যুক্তরাষ্ট্র উপসাগরীয় দেশগুলোকে একাট্টা হতে চাপ দিচ্ছে। ইরানের বিরুদ্ধে একটি যৌথ ফ্রন্ট গড়ে তোলার যুক্তরাষ্ট্রের চেষ্টায় এরই মধ্যে ইসরায়েলের সঙ্গে কয়েকটি আরব দেশের শান্তিচুক্তির পর সর্বশেষ অগ্রগতি হচ্ছে, কাতারের সঙ্গে উপসাগরীয় দেশগুলোর সম্পর্ক মেরামত।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন ক্ষমতার এই শেষ সময়ে এসেও ইরানের উপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ইরানের স্টিল শিল্পের ওপর মঙ্গলবার এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এছাড়া ইরানের এক ডজনের বেশি প্রতিষ্ঠান এবং এক ব্যক্তিকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে ওয়াশিংটন।
সৌদি আরবের জিসিসি সম্মেলনে নেতারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেও উপসাগরীয় অঞ্চল এবং বিশ্বের জন্য হুমকি হয়ে ওঠা ইরানকে মোকাবেলায় একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
আরো পড়ুনঃ নিয়ন্ত্রণের বাইরে করোনা, দেশে দেশে ফের লকডাউন
সৌদি যুবরাজ সালমান বলেন, তার দেশের ‘২০৩০ ভিশন’ পরিকল্পনা হচ্ছে, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদকে আরও একতাবদ্ধ করে গড়ে তোলার পাশাপাশি আরব ও ইসলামিক সহযোগিতা এমনভাবে আরও জোরদার করা যাতে আরব দেশগুলোর পাশাপাশি গোটা অঞ্চলের নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধি অর্জনে তা কাজে আসে।
একইসঙ্গে ইরানের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ইরান সরকারের পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির হুমকি এবং দেশটির ধ্বংসাত্মক পরিকল্পনা মোকাবেলায় একযোগে ‘গুরুতর ব্যবস্থা’ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা সৃষ্টি হয়েছে।”
আরো পড়ুনঃ সন্ত্রাসবাদে শূন্য রেটিং অর্জন করলো ওমান
পরে সংবাদ সম্মেলনে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক আবার পুরোপুরি চালু করতে রাজি হয়েছে সৌদি আরবসহ তিন আরব মিত্র দেশ। এদিকে কাতারের সঙ্গে উপসাগরীয় দেশগুলোর নতুন এই চুক্তিতে স্বাগত জানিয়েছেন আরব লীগ মহাসচিব। চুক্তিটি ওই অঞ্চলে শান্তি ফিরিয়ে আনবে বলে মত জর্ডানের উপপ্রধানমন্ত্রীর।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post