গত বছর ডিসেম্বরে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমান ঘুরতে যান দেশের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা তমা মির্জা ও তার জীবনসঙ্গী কানাডা প্রবাসী হিশাম চিশতী। তার স্বামীকে নিয়ে ওমানের বাংলাদেশ কমিউনিটির ২টি শোতে অংশ নেবার পাশাপাশি ওমানের বেশ কিছু সুন্দর জায়গায় ঘুরে বেড়ান এই দম্পতী।
ওমানকে নিয়ে বেশ প্রশংসাও করেন তমা। ওমান নিয়ে তমা বলছিলেন, বেশ গুছানো ছিমছাম সুন্দর একটি দেশ ওমান। আমার বেশ ভালোলাগছে। হিশামও এখানের আবহাওয়া, খাবার, জায়গাসহ সবকিছু বেশ ইনজয় করছে।
তবে ওমান ঘুরে আসার এক বছর যেতে না যেতেই ভেঙে যাচ্ছে চিত্রনায়িকা তমা মির্জার সংসার। ডিভোর্সের পথে হাঁটছেন এই অভিনেত্রী। তিনি নিজেই এমনটা জানালেন। তার ভাষ্য, খুব শিগগিরই আমি আমার স্বামী হিশাম চিশতিকে তালাকের কাগজপত্র পাঠাবো।
আমার আইনজীবীর সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলেছি। এরমধ্যে ডিভোর্সের কাগজপত্র তৈরি করা হয়েছে। চলতি সপ্তাহে তাকে তালাকনামা পাঠিয়ে দেবো। সত্যি বলতে কী, তার সঙ্গে সংসার করা সম্ভব না।
এদিকে চিত্রনায়িকা তমা মির্জার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তার স্বামী হিশাম চিশতি। গত ৬ ডিসেম্বর রাজধানীর বাড্ডা থানায় ওই ফৌজদারি মামলা করেন হিশাম চিশতি। এরপর চিত্রনায়িকা তমা মির্জাও তার স্বামীর বিরুদ্ধে বাড্ডা থানায় একটি মামলা করেছেন। ৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩০৭/১০৯ ধারায় দায়ের করা মামলায় তমা মির্জা ছাড়াও তার পরিবারের কয়েকজনকে আসামি করেছেন হিশাম চিশতি।
অপরদিকে গত ৫ ডিসেম্বর চিত্রনায়িকা তমা মির্জাও তার স্বামীর নামে বাড্ডা থানায় একটি মামলা করেছেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এবং যৌতুক জন্য মারপিটসহ হুমকি প্রদানের অভিযোগে মামলা করেন তমা মির্জা।
এই অভিনেত্রী বলেন, আমি এর আগেও তাকে একবার তালাক দিতে চেয়েছি। বিয়ের ছয়মাসের মাথায় তালাকের সিদ্ধান্ত নেই। সেই সময় তার পরিবারের সবার অনুরোধে তালাক থেকে সরে আসি।
কিন্তু এরপরেও সে নিজেকে শুধরে নিতে পারেনি। তাই আমাকে এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। গত বছর মে মাসে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডীয় ব্যবসায়ী হিশাম চিশতির সঙ্গে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন তমা।
কিন্তু বেশিদিন এক থাকতে পারছেন না এই দম্পতি। এরইমধ্যে একে অপরের বিরুদ্ধে থানায় মামলাও করেন। মামলায় হিশাম চিশতি উল্লেখ করেছেন পাওনা টাকা চাওয়ায় তাকে হত্যার চেষ্টা করেন তমা ও তার পরিবার। মামলা করার পরেই হিশাম আবার দেশ ছেড়ে কানাডায় চলে যান।
জীবনসঙ্গী হিশামকে নিয়ে ওমানে তমা মির্জাতবে হিশামের মামলাকে মিথ্যা বলছেন তমা। তিনি বলেন, আমার নামে হিশাম মিথ্যা অভিযোগ করছেন। যার কোনোটি সত্যি নয়। সে নিজেই আমাকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করতো। আমি তার নামে থানায় তিনটি মামলা করেছি। একটি হলো নারী নির্যাতন মামলা, অন্যটি যৌতুক মামলা।
হিশামের মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, মির্জা ফারজানা ইয়াসমিন তমা (তমা মির্জা) ও হিশাম চিশতীর প্রায় দেড় বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের পর বিভিন্ন সময়ে বাবা-মায়ের প্ররোচনায় তমা হিশামের কাছ থেকে মোট ২০ লাখ টাকা ধার হিসেবে নেন।
আরো পড়ুনঃ বৈধভাবে কানাডা যাবেন যেভাবে
ওমানের বাংলাদেশ কমিউনিটির সাথে তমা মির্জা সহ বাংলাদেশের শিল্পীরা
সেই ধারের টাকা ফেরত চাইলে কালক্ষেপণ শুরু হয়। এমন পরিস্থিতিতে গত ২৯ সেপ্টেম্বর হিশাম কানাডা থেকে দেশে আসেন। তখন তমাকে তাঁর নিজের বাসায় থাকতে বলেন। কিন্তু নানা অজুহাতে তমা স্বামীর বাসায় না গিয়ে বাবার বাসাতেই থাকেন।
গত বছরের ৯ মার্চ তমা মির্জার বাগদান হয় কানাডাপ্রবাসী ব্যবসায়ী হিশাম চিশতীর সাথে। জানাগেছে, কয়েক সপ্তাহ আগেও তমা মির্জা ও তাঁর কানাডাপ্রবাসী ব্যবসায়ী হিশাম চিশতী দুবাইয়ে হানিমুন করতে যান।
সেখানকার বেশ কিছু ছবিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেন। জানা গেছে, দেশে ফেরার পর থেকে তাঁদের সম্পর্কে টানাপোড়ন চলতে থাকে। ৫ ডিসেম্বর রাতে তাঁদের মধ্যে ঝগড়া ও হাতাহাতি হয়।
আরো পড়ুনঃ ইতালির নতুন ভিসা প্রত্যাশীদের দুয়ার খুললো
এরপর হিশাম শ্বশুরবাড়িতে গেলে তাঁর সঙ্গে তমাসহ বাড়ির সবাই খারাপ আচরণ শুরু করেন। একপর্যায়ে ৫ ডিসেম্বর দিবাগত রাত তিনটার দিকে তমা মির্জা হিশামকে তাঁর বাবার বাড্ডার বাসায় আসতে বলেন।
সেই রাতে নানা বিষয়ে আলোচনার পর ধার নেওয়া ২০ লাখ টাকা চাইলে বাসার সদস্যদের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয় হিশামের। এর একপর্যায়ে বাড়ির সদস্যরা ক্ষিপ্ত হয়ে হিশামের ওপর আক্রমণ করেন। ওড়না দিয়ে পেঁচিয়ে তাঁকে খুন করার চেষ্টা করা হয়।
আরো পড়ুনঃ পরকীয়া করে হাতেনাতে ধরা খেলো ওমান প্রবাসীর স্ত্রী
মামলাটির তদন্তের দায়িত্বে থাকা বাড্ডা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহমুদ হাসান বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার কারণে আমরা মোবাইল জব্দ করে ফরেনসিকে পাঠিয়েছি।
তাঁরা যে মারামারি করেছেন, সেটার জন্য মেডিকেল সার্টিফিকেট দরকার। আমরা মেডিকেল কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন চেয়ে চিঠি দিয়েছি। সবকিছু হাতে পেলেই জানা যাবে কোন অভিযোগ টিকবে আর কোন অভিযোগ টিকবে না। তখন মামলার অগ্রগতি হবে।’
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post