আমাদের আলোচনার শুরুতেই ‘সুখ’ কী, তা স্পষ্ট করে নেওয়া জরুরি। কারণ, সকলের কাছে সুখের ধারণা ভিন্ন হতে পারে। কারো কাছে সুখ হতে পারে স্থিতিশীল পারিবারিক জীবন, অন্যের কাছে আবার পেশাগত সাফল্য, আবার কারো কাছে হতে পারে নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জন।
বিবাহিত ও অবিবাহিত এই দুই অবস্থা নিয়ে বেশ তর্ক হয়। তর্কের বিষয় কারা বেশি সুখী। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ফল আসে বিবাহিতরা কম সুখী। অনেকে বলে থাকেন, বিবাহিত জীবনে সুখ একটি বিরল বস্তু। কিন্তু আসলেই কি তাই?
সম্প্রতি প্রকাশিত গ্যালাপ ও আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব ফ্যামিলি স্টাডিজের জরিপ কিন্তু বলছে ভিন্ন কথা। এতে জানা যায়, অবিবাহিতদের চেয়ে বিবাহিতরাই বেশি সুখী। আমেরিকায় ১৪ বছরের ডেটা নিয়ে এই জরিপ করে গ্যালাপ। একই বয়সের বিবাহিত ও অবিবাহিতদের ওপর এই জরিপ চালানো হয়।
এতে দেখা যায়, বিয়ে ছাড়া কোনো সম্পর্কে যারা আছেন, তারাও বিবাহিতদের চেয়ে অনেক কম সুখী। গ্যালাপের গবেষক জোনাথন রুথওয়েল সিএনএনকে বলেন, এই গবেষণার মাধ্যমে জানা গেল মানুষ আসলে তার জীবনকে কীভাবে মূল্যায়ন করে। মানুষের মতামত নিয়েই এই জরিপ করা হয়।
২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আমেরিকার ২৫ লাখের বেশি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ওপর এই জরিপ চালানো হয়। তাদের প্রশ্ন করা হয়, জীবনের বর্তমান অবস্থাকে কীভাবে মূল্যায়ন করেন। শূন্য থেকে দশ পর্যন্ত রেটিং করতে বলা হয়। এরপর জানতে চাওয়া হয়, আগামী ৫ বছরের মধ্যে তারা কী পরিবর্তন দেখতে চান?
বিবাহিত ও একই বয়সে অবিবাহিতদের মধ্যে তুলনা করলে বিবাহিতরাই বেশি সুখী বলে জানান। এমনকি যারা অবিবাহিত ছিলেন, তারা পরের বছর বিয়ে করে জানান, তারা সুখী।
এ ছাড়া জরিপে দেখা যায়, প্রতি বছরই অবিবাহিতদের সুখী থাকার পরিমাণ কমে যাচ্ছে। বছর পার হচ্ছে আর অনেকে সুখী থেকে অসুখী হচ্ছেন। গত বছরের হিসাবই এই চিত্র স্পষ্ট করে দেবে। গত বছর ২৫ থেকে ৫০ বছর বয়সী বিবাহিত ও অবিবাহিতদের মধ্যে জরিপে সুখী হিসেবে বিবাহিতরা ১৭ পয়েন্ট এগিয়ে।
এতে আশ্চর্যজনক কিছু তথ্য বেরিয়ে আসে। কমশিক্ষিত বিবাহিতরা উচ্চশিক্ষিত অবিবাহিতদের চেয়ে বেশি সুখী। গত ৫০ বছরে আমেরিকায় বিয়ে কমে গেছে ৬০ শতাংশ। এ কারণে বেড়ে যাচ্ছে একাকীত্ব। এ অবস্থায় বিয়ে সুখের একেটি মাধ্যম হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post