বেনিতো মুসোলিনির ফ্যাসিবাদী সরকার ১৯৩০-এর দশকে চুরি করেছিল ইথিওপিয়ার প্রথম বিমান। সেই চুরির প্রায় ৯০ বছর পর ইতালি সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ইথিওপিয়াকে বিমানটি ফিরিয়ে দিয়েছে।
গত মঙ্গলবার সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বিমানটি ফিরিয়ে দেওয়ায় ইতালি সরকারের প্রতি ধন্যবাদ জানান ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ আলি। সেদিনই ইথিওপিয়ার সম্রাট হাইলে সেলাসির রাজকন্যার সম্মানে রাখা ‘সেহাই’ নামের বিমানটির আনুষ্ঠানিক হস্তান্তর হয়।
আবি তাঁর সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এক্সের অ্যাকাউন্ট থেকে দেওয়া পোস্টে লাল রঙের দুই সিটার বিমানের ছবি দিয়ে লিখেছেন, ‘আজ ইথিওপিয়ানদের জন্য একটি গর্বের দিন। ইতালি সরকার সেহাই বিমানটি আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেছে। আমরা এই উপলক্ষ উদ্যাপন করছি। বিমানটির প্রত্যাবর্তনের জন্য গত বছর থেকে সমর্থন দেওয়ায় ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই।’
হাইলে সেলাসির শাসনামলে ১৯৩৫ সালে নির্মিত হয় সেহাই বিমানটি। জার্মান পাইলট হের লুডভিগ ওয়েবার এবং ইথিওপিয়ান প্রকৌশলীদের প্রচেষ্টায় নির্মিত হয় এই বিমান। ১৯৩৫ সালের ডিসেম্বরে বিমানটির প্রথম ফ্লাইটে আদ্দিস আবাবা থেকে ওয়েবার প্রায় ৩০ মাইল (৫০ কিলোমিটার) দূরত্ব অতিক্রম করেন। ফ্লাইটটি প্রায় সাত মিনিট স্থায়ী হয়েছিল।
১৯৩৬ সালের মে মাসে ইতালীয় বাহিনী ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবার নিয়ন্ত্রণ নেয়। সে সময় পরিত্যক্ত হওয়া পর্যন্ত বিমানটি উড়েছে প্রায় ৩০ ঘণ্টা। ঐতিহাসিকদের মতে, মুসোলিনি ইথিওপিয়া দখলের পর বিমানটি ইতালিতে নিয়ে যান। আদ্দিস আবাবায় শুরু হয় ফ্যাসিস্টদের শাসন। ১৯৪১ সাল থেকে ইতালির বিমানবাহিনী জাদুঘরে রাখা ছিল বিমানটি। ইতালির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এটিকে ‘অনন্য নমুনা’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।
ইতালির প্রতিরক্ষামন্ত্রী গুইদো ক্রসেতো বলেন, ‘এই হস্তান্তরের ঘটনা একটি শক্তিশালী বার্তা দেয় যে, ইতালি-আফ্রিকা শীর্ষ সম্মেলনের পর আমাদের দুই দেশের (ইতালি-ইথিওপিয়া) মধ্যে শক্তিশালী বন্ধনকে তুলে ধরতে চায় ইতালি। সেই সঙ্গে, সংলাপ এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার গুরুত্বের ওপর জোর দেয় ইতালি।’
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post