বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কিছু সমস্যা আছে উল্লেখ করে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান জানিয়েছেন, সমস্যাগুলো ইতোমধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) সচিবালয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। সাক্ষাৎ শেষে মন্ত্রী এ কথা জানান।
বিমানের দুর্নীতিসহ নানা ধরনের অভিযোগ আছে। সিট খালি থাকলেও বলা হয় টিকিট নেই। সাংবাদিকরা এ বিষয়ে মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, বিমানের অব্যবস্থাপনা কতটা আছে, সেটা আরো খতিয়ে দেখতে হবে। তবে আমি মনে করি, বিমান বেশ ভালোই চলছে, লাভজনকভাবে চলছে এবং যাত্রী সেবা দিয়ে যাচ্ছে।
মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা যদি বিমানকে নিয়ে খুব বেশি আশা পোষণ করেন, এমিরেটসের মত তুলনা করেন, তাহলে কিন্তু সঠিক হবে না। আমাদের লিমিটেড এয়ারক্রাফ্ট নিয়ে চলতে হয়। এয়ারক্রাফ্ট টেকনিক্যাল ত্রুটি মাঝেমাঝে হয়ে যায়। তাছাড়া শীতকালে কুয়াশার কারণে সমস্যা হয়। এগুলো আপনাদের মনে রাখতে হবে। এগুলোর জন্য অনেক সময় দেরি হয়, যাত্রায় অন্যান্য সমস্যাগুলো তৈরি হয়।
তিনি বলেন, এই সমস্যার মাঝেও বিমান চেষ্টা করে যাচ্ছে আরও উন্নতি কীভাবে করা যায়, নতুন বিমান কেনার ব্যাপার নিয়ে আমরা চিন্তাভাবনা করছি।
মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, বিমানের কিছু সমস্যাও আছে। সেই সমস্যাগুলো ইতোমধ্যে চিহ্নিত করেছি। বেশ কিছু লোককে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। আপনারা দেখেছেন, কিছুদিন আগে দুজন পালিয়ে গেছে, তাদের ব্যাপারে আমরা কঠোর অ্যাকশনে গিয়েছি। যে বাংলাদেশে আছে, তাকে অ্যারেস্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে, যে কানাডায় পালিয়ে গেছে, ইতোমধ্যে তার পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে এবং যেখানে দুর্নীতি আছে, সেগুলোকে আমরা খতিয়ে দেখছি এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
অন অ্যারাইভাল ভিসা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, অন অ্যারাইভাল ভিসার ব্যাপারটা শুধু ভারতের সঙ্গেই নয়, সব দেশের সঙ্গেই আমরা আলোচনা করব। বিশেষ করে ট্যুরিস্টরা যাতে অন অ্যারাইভাল ভিসা পান, আমাদের অ্যাম্বাসিগুলোতে যারা টুরিস্ট হিসেবে আসতে চান, তারা যাতে ভিসাটা দ্রুততার সাথে পান সেগুলো নিয়ে আলোচনা করব। ইনশাআল্লাহ আগামী সপ্তাহের দিকে এগুলো নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করব।
ভারতীয়দের ভিসা পাওয়া পশ্চিমবঙ্গের থেকে বাংলাদেশে অনেক সহজ। কিন্তু বাংলাদেশিদের ভিসা পাওয়া নিয়ে অনেক জটিলতা আছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, আমি একটু আগেই আপনাদেরকে বলেছি, এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আমরা আলোচনা করব।
নতুন করে বাজেট বাড়ানোকে যৌক্তিক মনে করেন কি না- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, নতুন করে বাজেট বাড়ানোর প্রয়োজন আছে কি না সেটা তো প্রত্যেকেই দেখছেন। আমাদের সঙ্গে এটা নিয়ে যখন আলোচনা হবে, তখন আমরা দেখব যে বাজেট বাড়ানো লাগবে কি না।
নতুন নতুন উপাদান যুক্ত হচ্ছে, তো সেখানে হয়ত বাজেট বাড়ানোর প্রয়োজন হতে পারে। প্রবাসী এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিমানবন্দরে আলাদা কাউন্টারের ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান বিমানমন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, বিমান এবং পর্যটনের কো-অপারেশন বাড়ানো নিয়ে আলোচনা করেছি। সেখানে ভারত আমাদের কিছু অফার দিয়েছে, আমরাও সেগুলো বিবেচনা করব।
তিনি বলেন, প্রতিদিন প্রায় দুইশ’র উপরে ফ্লাইট বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে চলাচল করে। এটা আরও বৃদ্ধি করার প্রয়োজনীয়তা আছে কি না, তারা আলোচনা করেছেন ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। আমরা বলেছি আমরাও এটা দেখব। এছাড়া ট্যুরিজম সেক্টরে আমরা আলোচনা করেছি।
কীভাবে উভয় দেশের মধ্যে, বিশেষ করে ভারত থেকে বাংলাদেশে আরও বেশি করে পর্যটক আসতে পারে তার জন্য পর্যটন মেলার ব্যবস্থা আমরা দুই দেশই করব। সেখানে ভিসাকে সহজ করার জন্য কী করা যায়, সেগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।এসময় দুই দেশের মধ্যকার ভিসা জটিলতা নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করবেন বলেও বিমানমন্ত্রী জানান।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post