দক্ষিণ আফ্রিকার জোহান্সবাগে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নুরুল হুদা ওরফে লিটন (৩৪) নামের এক বাংলাদেশি ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। কিছুদিনের মধ্যে তার দেশে আসার কথা ছিল। কিন্তু তার স্বপ্ন আর পূরণ হলো না। স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৬ জানুয়ারী) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে লিটনকে নিজ দোকানের সামনে গুলি করে এক সন্ত্রাসী। নিহত লিটনের বাড়ি ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলায়।
নিহতের বন্ধু গাজী মামুন এবং ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, সন্ধ্যায় লিটন সামিট ক্লাবের সামনে সে মোবাইল (টিপছিলেন) দেখতেছিলেন। এ সময় এক ঘাতক পেছন দিক থেকে লিটনের পিঠ বরাবর দুই রাউন্ড গুলি করে পালিয়ে যায়।ঘটনাস্থলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। স্থানীয় বাংলাদেশিরা দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয় বাংলাদেশিদের মতে ব্যবসায়ীক অথবা তার আফ্রিকান স্ত্রীর সাথে মনোমালিন্যের কারণে এটি একটি পরিকল্পিত হত্যা। তবে কি কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে সঠিক কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
লিটন দাগনভূঞা পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড পূর্ব জগতপুর গ্রামের লাল মোহাম্মদের বাড়ির এবাদুল হকের ছেলে। দক্ষিণ আফ্রিকায় অবস্থানরত নুরুল হুদার ছোট ভাই নুরুল আলম মুঠোফোনে পরিবারের সদস্যদের এ তথ্য জানিয়েছেন। নুরুল হুদার চাচাতো ভাই মনির হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
নুরুল হুদার চাচাতো ভাই মনির হোসেন জানান, দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের হিলব্রু এলাকায় ব্যবসা করতেন নুরুল হুদা। সেখানে তার দুটি দোকান রয়েছে। কিছুদিন ধরে সেখানে অবস্থিত এক বাংলাদেশির সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেন নিয়ে তার বিরোধ চলছিল।
শনিবার (২৭ জানুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে দোকানের সামনের সড়কে নুরুল হুদাকে একা পেয়ে সন্ত্রাসীরা গুলি করে পালিয়ে যায়। আশপাশের লোকজন দ্রুত এগিয়ে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কিছুক্ষণ পর তিনি মারা যান।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, কিছুদিনের মধ্যে নুরুল হুদার দেশে আশার কথা ছিল। তার বিয়ের জন্য বাড়িতে মেয়ে দেখা চলছিল। এ জন্য বাড়িতে একতলা ভবনের কাজও শেষ করা হয়েছে। দুই দিন আগে নুরুল হুদা বাবাকে বলেছিলেন, ১৫ ফেব্রুয়ারি দেশে এসে নতুন ঘরেই উঠবেন।
দাগনভূঁঞা সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হওয়ার খবর জানার পর নুরুল হুদার বাড়িতে শোকের মাতম শুরু হয়েছে। তাঁর বৃদ্ধ বাবা এবাদুল হক অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী। তিনি ছেলের লাশ দেশে আনার আকুতি জানিয়েছেন।
ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় অবস্থিত স্বজনদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁর লাশ দেশে আনার প্রস্তুতি চলছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post